টিউলিপের কোনো চিঠি পাইনি : প্রেস সচিব
ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাতের অনুরোধপত্র বিষয়ে মুখ খুললেন প্রেস সচিব শফিকুল আলম
যুক্তরাজ্যের এমপি এবং সাবেক মন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিক অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করার আগ্রহ প্রকাশ করে যে চিঠি পাঠিয়েছেন বলে ব্রিটিশ গণমাধ্যমে খবর প্রকাশ হয়েছে, তা প্রসঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম জানিয়েছেন— “আমরা টিউলিপ সিদ্দিকের কোনো চিঠি পাইনি।”
রোববার (৮ জুন) বিকেলে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে প্রেস সচিব বলেন, “আমরা ৫ জুন থেকে ছুটিতে আছি। অফিসিয়ালি কোনো পত্র আমাদের হাতে পৌঁছায়নি।”
এর আগে যুক্তরাজ্যের প্রভাবশালী গণমাধ্যম ‘দ্য গার্ডিয়ান’ এক প্রতিবেদনে জানায়, টিউলিপ সিদ্দিক বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা ও নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসকে চিঠি দিয়ে সাক্ষাতের অনুরোধ করেছেন। তার উদ্দেশ্য— দুর্নীতির অভিযোগ ঘিরে তৈরি হওয়া ‘ভুল–বোঝাবুঝির’ অবসান ঘটানো।
প্রকাশিত প্রতিবেদনে টিউলিপ সিদ্দিক তার চিঠিতে লিখেছেন:
“আমি যুক্তরাজ্যের একজন নাগরিক, লন্ডনে জন্মগ্রহণ করেছি এবং গত এক দশক ধরে হ্যাম্পস্টেড অ্যান্ড হাইগেট এলাকার বাসিন্দাদের প্রতিনিধি হিসেবে ব্রিটিশ পার্লামেন্টে দায়িত্ব পালন করছি। বাংলাদেশে আমার কোনো সম্পত্তি নেই, কখনও ছিল না এবং ভবিষ্যতেও কোনো ব্যবসায়িক আগ্রহ বা পরিকল্পনা নেই।”
তিনি আরও বলেন,
“আমি বাংলাদেশকে হৃদয়ে ধারণ করি, তবে সেটি আমার জন্মভূমি নয়। আমি লন্ডনে বড় হয়েছি, লেখাপড়া করেছি এবং পেশাগত জীবন গড়ে তুলেছি।”
টিউলিপ অভিযোগ করেন, বাংলাদেশে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) তার বিরুদ্ধে একটি “অলীক অনুসন্ধান” শুরু করেছে এবং তা পরিচালনা করছে তার আইনজীবীদের সঙ্গে যোগাযোগ ছাড়াই। তিনি বলেন, “আমার আইনজীবীরা লন্ডন থেকে দুদকের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তারা কোনো সহযোগিতা পায়নি।”
“ঢাকায় একটি ভুল ঠিকানায় আমাকে তলব করে চিঠি পাঠানো হচ্ছে। অথচ প্রতিটি পদক্ষেপ গণমাধ্যমে তুলে ধরা হচ্ছে। এটি আমার প্রতি চরম অবিচার।”
চিঠিতে তিনি স্পষ্ট করে জানান,
“আমার সঙ্গে বাংলাদেশের বর্তমান ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আত্মীয়তার সম্পর্ক নিয়ে যেসব ভুল ব্যাখ্যা দেওয়া হচ্ছে, সেগুলো দূর করতেই আমি অধ্যাপক ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে চাই। আমি আশা করি, আপনি যুক্তরাজ্য সফরে থাকাকালে আমাদের দেখা হবে এবং একটি খোলামেলা আলোচনা সম্ভব হবে।”
প্রসঙ্গত, অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস রাজা তৃতীয় চার্লসের আমন্ত্রণে চার দিনের সরকারি সফরে আগামীকাল সোমবার (৯ জুন) যুক্তরাজ্যের উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করবেন। তার এ সফরে ব্রিটেনের রাজা এবং নতুন নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের সঙ্গে সাক্ষাতেরও কথা রয়েছে। সফর শেষে তিনি ১৪ জুন দেশে ফিরবেন।
যদিও আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে চিঠির বিষয়ে বিস্তর আলোচনা হয়েছে, তবে প্রধান উপদেষ্টার দপ্তর থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে এখনো সে চিঠি পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়নি। প্রেস সচিবের বক্তব্যে সেই অনিশ্চয়তা আরও জোরালো হলো।