২৪ ঘণ্টার মধ্যে গাজা উপকূলে পৌঁছাবে ত্রাণবাহী জাহাজ ‘ম্যাডলিন’
গাজার ক্ষুধার্ত জনগণের পাশে দাঁড়াতে এবং ইসরায়েলের দখলদারিত্ব ও অবরোধের বিরুদ্ধে প্রতীকী প্রতিবাদ জানাতে সাহসী এক যাত্রা শুরু করেছে ‘ম্যাডলিন’ নামের একটি ত্রাণবাহী জাহাজ। আন্তর্জাতিক অলাভজনক সংস্থা ফ্রিডম ফ্লোটিলা কোয়ালিশন (FFC) পরিচালিত এই জাহাজটি ইতালি থেকে যাত্রা শুরু করে বর্তমানে মিসরের উপকূলে অবস্থান করছে। পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই গাজার উপকূলে পৌঁছানোর আশা করা হচ্ছে।
‘ম্যাডলিন’ জাহাজে আছেন ১২ জন আন্তর্জাতিক মানবাধিকারকর্মী, যারা বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে এসেছেন গাজার দিকে একটি শক্তিশালী বার্তা নিয়ে: “মানবিক সহায়তা থামানো যাবে না।”
এদের মধ্যে রয়েছেন:
এই বহুজাতিক টিম শুধু ত্রাণ নিয়েই আসছেন না, তারা গাজার জনগণের জন্য ন্যায়বিচার ও সম্মানের দাবিও জানাচ্ছেন।
২০২৪ সালের ২ মার্চ থেকে ইসরায়েল গাজায় ত্রাণ প্রবেশ সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করে দেয়। এতে ভয়াবহ খাদ্যসংকট তৈরি হয়, যার ফলে অনেক শিশু অনাহারে মারা যায়।
বর্তমানে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার হিসাব অনুযায়ী, গাজার ২৩ লাখ জনগণের মধ্যে ৯০ শতাংশের বেশি মানুষ খাদ্যসংকটে ভুগছেন। অনেক জায়গায় চিকিৎসা, পানি ও শিশুদের মৌলিক প্রয়োজনীয় সামগ্রীর চরম সংকট দেখা দিয়েছে।
‘ম্যাডলিন’ জাহাজে গাজার মানুষের জন্য জরুরি প্রয়োজনীয় ত্রাণসামগ্রী রয়েছে, যার মধ্যে আছে:
এই সহায়তাগুলো গাজার জন্য জীবন-মরণ ব্যবধান হয়ে উঠতে পারে।
ইসরায়েলের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ‘ম্যাডলিন’ জাহাজটিকে তারা তাদের জলসীমায় প্রবেশ করতে দেবে না। এ অবস্থায় জাহাজে থাকা মানবাধিকারকর্মীরা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন, যেন ‘ফ্রিডম ফ্লোটিলা’র নিরাপদ যাত্রা নিশ্চিত করা হয়।
ইউরোপীয় পার্লামেন্টের সদস্য রিমা হাসান এক ইনস্টাগ্রাম পোস্টে বলেন,
“আমরা ইসরায়েলের অবৈধ নিয়ন্ত্রণে থাকা গাজার উপকূলে পৌঁছাতে যাচ্ছি। সব দেশের সরকারকে আহ্বান জানাই— মানবিক সহায়তার এই উদ্যোগের নিরাপত্তা নিশ্চিত করুন।”
জাহাজটির নামকরণ করা হয়েছে গাজার প্রথম এবং একমাত্র নারী মৎস্যজীবী ‘ম্যাডলিন’–এর নামে, যিনি সাহসিকতার প্রতীক হয়ে উঠেছেন। তাঁর নামেই এই জাহাজ গাজায় নতুন আশার আলো বহন করে নিয়ে যাচ্ছে।
মানবতার পক্ষেই দাঁড়ানো এখন সময়ের দাবি
বিশ্ব যখন যুদ্ধ ও অবরোধে বিপর্যস্ত, তখন কিছু মানুষ নির্ভীক হয়ে একটুকু খাবার, ওষুধ আর আশা নিয়ে এগিয়ে আসছেন। ‘ম্যাডলিন’ শুধুই একটি জাহাজ নয়— এটি মানবতা, প্রতিবাদ ও সহানুভূতির একটি চলমান প্রতীক।
পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় বিশ্ববাসী চোখ রাখবে ভূমধ্যসাগরের একটি ছোট্ট নৌযাত্রার দিকে— যে যাত্রা হয়তো একটি জাতির ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করতে পারে।