“সোনার বাংলার স্বপ্ন দেখিয়ে দেশকে শ্মশানে পরিণত করা হয়েছে”—মৌলভীবাজারে ঈদ শুভেচ্ছা অনুষ্ঠানে জামায়াত আমির ডা. শফিকুর রহমান
জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, “অতীতে অনেকে সোনার বাংলার স্বপ্ন দেখিয়ে দেশকে শ্মশানে পরিণত করেছে। এই জাতিকে আর ধোঁকা দিতে দেওয়া যাবে না। মানুষ আর প্রতারণার ফাঁদে পা দেবে না।” তিনি বলেন, “আজও দেশে ফ্যাসিবাদ বিরাজ করছে। আমরা তা কখনোই মেনে নেব না, বরং তা রুখে দিতে হবে সম্মিলিতভাবে।”
শনিবার (৭ জুন) সন্ধ্যায় মৌলভীবাজারের কুলাউড়া পৌরসভা হলরুমে সর্বস্তরের মানুষের অংশগ্রহণে আয়োজিত এক ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানটিতে স্থানীয় রাজনৈতিক নেতাকর্মী, জনপ্রতিনিধি, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি, সাংবাদিক এবং সাধারণ মানুষ উপস্থিত ছিলেন।
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে দৃঢ় কণ্ঠে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে জামায়াত আমির বলেন, “ভোট ডাকাতির চেষ্টা করা হলে সংশ্লিষ্টদের হাত অবশ করে দেওয়া হবে। জনগণের ভোটাধিকার হরণ করা হলে তা বরদাস্ত করা হবে না।” তিনি আরও বলেন, “সুষ্ঠু নির্বাচন ছাড়া দেশের গণতন্ত্র সুপ্রতিষ্ঠিত হতে পারে না। তাই জনগণকে সঙ্গে নিয়ে আমরা নিরপেক্ষ নির্বাচনের দাবিতে রাজপথে থাকব।”
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, “বাংলাদেশের মানুষ শান্তি, ন্যায়বিচার ও মর্যাদাপূর্ণ জীবনের আশায় রাজনীতির প্রতি আস্থা রেখেছে। কিন্তু দুঃখজনকভাবে বারবার তাদের সেই আস্থা ভেঙে গেছে। আমরা চাই দেশে একটি গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হোক যেখানে জনগণের মতামতই হবে চূড়ান্ত। ভোটাধিকার হরণ করে ক্ষমতায় থাকার সংস্কৃতি এবার বন্ধ হোক।”
তিনি আরও বলেন, “আসন্ন দিনগুলো হবে আন্দোলনের দিন। সুশাসন, ইনসাফ এবং ইসলামী মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠায় আমাদের আন্দোলন চলবে, তবে তা হবে শান্তিপূর্ণ ও গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে।”
ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময়ের পাশাপাশি তিনি জনগণকে আহ্বান জানান, “আপনারা সতর্ক থাকুন। এই দেশে আর যেন কেউ মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে ক্ষমতায় এসে দেশকে ধ্বংসের পথে না ঠেলে দিতে পারে। সময় এসেছে সত্য ও ন্যায়ের পক্ষে এক হয়ে দাঁড়াবার।”
উল্লেখ্য, জামায়াতে ইসলামীর রাজনৈতিক অবস্থান এবং অতীত কর্মপন্থা নিয়ে দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে বিভিন্ন সময়ে বিতর্ক থাকলেও দলটি বর্তমানে নিজস্ব আদর্শ ও পথনির্দেশনার আলোকে পুনর্গঠনের প্রক্রিয়ায় রয়েছে।
ডা. শফিকুর রহমানের বক্তব্য রাজনৈতিক মহলে ইতোমধ্যে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।