যুক্তরাজ্যে পাচার অর্থ ফেরতের উদ্যোগে চার দিনের সফরে ঢাকা ছাড়ছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস
বিশেষ সংবাদদাতা :
আন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ও নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস চার দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে আগামীকাল সোমবার (৯ জুন) যুক্তরাজ্যের উদ্দেশ্যে ঢাকা ত্যাগ করবেন। এই সফরের মূল লক্ষ্য যুক্তরাজ্যে পাচার হওয়া বাংলাদেশি অর্থ ফেরত আনার উদ্যোগকে কেন্দ্র করে কূটনৈতিক আলোচনার মাধ্যমে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় নিশ্চিত করেছে, ১০ থেকে ১৩ জুন পর্যন্ত চলবে এই উচ্চপর্যায়ের সফর। সফরের সময় একাধিক গুরুত্বপূর্ণ কূটনৈতিক ও আনুষ্ঠানিক কর্মসূচিতে অংশ নেবেন প্রধান উপদেষ্টা।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, “এই সফরের অন্যতম এজেন্ডা হলো পাচারকৃত অর্থ ফেরত আনা। পাশাপাশি বিনিয়োগ বাড়ানো এবং রোহিঙ্গা সংকট নিয়েও আলোচনা হতে পারে। তবে এই আলোচনার বাস্তবায়ন অনেকটাই ব্রিটিশ সরকারের সদিচ্ছার উপর নির্ভর করবে।”
তিনি আরও জানান, সাম্প্রতিক আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক পরিবর্তনের প্রেক্ষাপটে এই সফর বিশেষ গুরুত্ব বহন করছে, বিশেষত তখন, যখন বাংলাদেশের নির্বাচিত সরকারের অনুপস্থিতিতে একটি অন্তর্বর্তীকালীন প্রশাসন দায়িত্ব পালন করছে।
সাবেক কূটনীতিক রাশেদ চৌধুরী বলেন, “যুক্তরাজ্য বরাবরই একটি নির্বাচিত সরকারের সঙ্গে কাজ করতে আগ্রহী। ফলে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার এই সফরের কূটনৈতিক ফলপ্রসূতা সীমিত থাকতে পারে।”
তবে তিনি আরও যোগ করেন, “এই সফর হতে পারে একটি বার্তা—বাংলাদেশ এখনও আন্তর্জাতিক যোগাযোগ ও সহযোগিতার ক্ষেত্রে সক্রিয় এবং স্বচ্ছতা প্রতিষ্ঠায় আগ্রহী।”
ড. ইউনূসের এই সফরের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ দিক হচ্ছে রাজা তৃতীয় চার্লসের কাছ থেকে “কিংস চার্লস হারমনি অ্যাওয়ার্ড” গ্রহণ। এটি তার সামাজিক ব্যবসা, ক্ষুদ্রঋণ এবং সামাজিক উদ্যোগের মাধ্যমে বৈশ্বিক শান্তি ও সংহতিতে অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে প্রদান করা হচ্ছে।
এই পুরস্কার শুধু একজন ব্যক্তির অর্জন নয়, এটি বাংলাদেশের পক্ষ থেকেও একটি ইতিবাচক বার্তা বহন করে যে—দেশটির নাগরিকেরা বিশ্ব পরিসরে ইতিবাচক ভূমিকা রাখছে।
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার এই সফর রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক পর্যায়ে যেমন বহুমাত্রিক গুরুত্ব বহন করে, তেমনি তা দেশের অর্থনৈতিক স্বার্থ এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্কেও নতুন মাত্রা যোগ করতে পারে। তবে বাস্তবায়ন নির্ভর করবে রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট ও আন্তর্জাতিক সহযোগিতার সদিচ্ছার উপর।