ভোটের সমতল মাঠ নিশ্চিত হলে রোডম্যাপ অনুযায়ী নির্বাচন সম্ভব: জামায়াত আমির
স্টাফ রিপোর্টার | মৌলভীবাজার | ৭ জানুয়ারি ২০২৫
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, বিচার ব্যবস্থার সংস্কার, জুলাই ঘোষণাপত্রের বাস্তবায়ন ও ভোটের সমতল মাঠ নিশ্চিত করা গেলে দেশের রাজনৈতিক সংকটের সমাধানসহ রোডম্যাপ অনুযায়ী একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন সম্ভব। তিনি বলেন, “জাতি আর যেনতেন নির্বাচন চায় না। জনগণ চায় একটি স্বচ্ছ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ ভোটের ব্যবস্থা।”
শনিবার (৭ জানুয়ারি) সকাল সাড়ে ৮টায় মৌলভীবাজার জেলার কুলাউড়া উপজেলার ভাটেরা ইউনিয়নের তুলাপুর পাঁচগাঁও গ্রামের ঈদগাহ ময়দানে ঈদের নামাজ আদায় শেষে স্থানীয় মুসল্লি ও সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, “দেশে গত তিনটি জাতীয় নির্বাচনে জনগণ প্রকৃত অর্থে ভোট দিতে পারেনি। তাদের সেই অধিকার হরণ করা হয়েছে। এবার নতুন প্রজন্ম, বিশেষ করে তরুণ ভোটারদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে হবে। যুবসমাজকে ভোটের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় সম্পৃক্ত করা সময়ের দাবি।”
তিনি আরও বলেন, “যদি প্রধান উপদেষ্টা আমাদের কাছে কোনও সহযোগিতা চান এবং তা জাতির কল্যাণে হয়, আমরা সহযোগিতা করতে প্রস্তুত আছি। তবে মনে রাখতে হবে—এই সংকট শেষ হওয়া এখন সবচেয়ে জরুরি।”
ঈদের জামাতে অংশগ্রহণ ও ধর্মীয় বার্তা:
ঈদের নামাজের আগে আমীরে জামায়াত মুসল্লিদের উদ্দেশ্যে সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে বলেন, “হজরত ইব্রাহীম (আ.) আমাদের ত্যাগ, আত্মনিয়োগ ও আল্লাহর আদেশ পালনের যে মহান আদর্শ দিয়েছেন, তা থেকে আমাদের শিক্ষা নিতে হবে। সেই শিক্ষাকে ধারণ করে আমাদের একটি কল্যাণময় ও আদর্শ বাংলাদেশ গড়তে হবে।”
তিনি দেশবাসীকে রাজনৈতিক, সামাজিক ও নৈতিক অগ্রগতির লক্ষ্যে ঐক্যবদ্ধভাবে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত নেতৃবৃন্দ:
ঈদের জামাতে ও পরবর্তী মতবিনিময় সভায় জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় পর্যায়ের একাধিক গুরুত্বপূর্ণ নেতা উপস্থিত ছিলেন। তাদের মধ্যে ছিলেন:
ডা. শফিকুর রহমানের এই বক্তব্য রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন মাত্রা যোগ করেছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। একদিকে নির্বাচন ঘিরে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার মধ্যে শান্তিপূর্ণ, অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন নিয়ে জামায়াতের অবস্থান পরিষ্কার হয়েছে, অন্যদিকে সরকারকে সহযোগিতার বার্তা দিয়ে একটি সম্ভাব্য সংলাপ ও সমঝোতার পথও খোলা রাখা হয়েছে।
শেষ কথায়, ঈদ উপলক্ষে সাধারণ মানুষের সঙ্গে আমীরে জামায়াতের সরাসরি সংযোগ ও জনমত শোনার এই উদ্যোগ রাজনৈতিক ও ধর্মীয় উভয় দৃষ্টিকোণ থেকে তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন স্থানীয় বাসিন্দারা ও বিশ্লেষকরা।