কোরবানির ঈদ ঘনিয়ে আসতেই বাগেরহাটের পশুর হাটে জমজমাট কেনাবেচা, দাম নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া
আজীজুল রহমান, মাল্টিমিডিয়া রিপোর্টার, বাগেরহাট:
পবিত্র ঈদ-উল-আযহা যতই ঘনিয়ে আসছে, ততই প্রাণচাঞ্চল্য ফিরে পাচ্ছে দেশের কোরবানির পশুর হাটগুলো। এরই মধ্যে বাগেরহাট জেলার ফকিরহাট উপজেলার অন্যতম পশুর হাট—ফকিরহাট কাজী আজহার আলী কলেজ মাঠে শুরু হয়েছে গরু-ছাগলের জমজমাট বেচাকেনা। সকাল থেকেই হাটে ছিল গরু ও ছাগল বিক্রেতাদের ভিড়। সেই সঙ্গে দেখা গেছে আগ্রহী ক্রেতাদেরও উপস্থিতি। হাটে দেশি গরুর পাশাপাশি উন্নত জাতের গরু যেমন শাহীওয়াল, ফ্রিজিয়ান, ও সিন্ধি জাতের গরুও উঠেছে। ছাগলের মধ্যে ব্ল্যাক বেঙ্গল ও জামুনাপাড়ি জাতের চাহিদা বেশি দেখা গেছে।
তবে পশুর দাম নিয়ে রয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। অনেক ক্রেতা অভিযোগ করেছেন, গত বছরের তুলনায় এবার গরু-ছাগলের দাম বেশি। হাটে ৩-৪ মণ ওজনের গরুর দাম চাওয়া হচ্ছে ৯০ হাজার থেকে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত। মাঝারি আকারের ছাগল বিক্রি হচ্ছে ১৫ থেকে ২৫ হাজার টাকায়। তবে বিক্রেতাদের ভাষ্য অনুযায়ী, গত এক বছরে পশু খাদ্যের দাম এবং লালন-পালনের খরচ অনেক বেড়ে গেছে, ফলে দাম কিছুটা বেশি হলেও তা যৌক্তিক। অনেকে আবার হাটের শুরুতেই পশু কিনে নিতে চাচ্ছেন, আবার কেউ কেউ অপেক্ষায় আছেন শেষ সময়ে একটু কম দামে ভালো গরু কেনার আশায়।
হাটে নিরাপত্তা এবং সার্বিক ব্যবস্থাপনাও নজরে পড়ার মতো। স্থানীয় প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে হাটে মোতায়েন রয়েছে পর্যাপ্ত পুলিশ এবং স্বেচ্ছাসেবক। হাটে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা এক পুলিশ কর্মকর্তা জানান, “ক্রেতা-বিক্রেতাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে নিয়মিত টহল এবং সিসিটিভির মাধ্যমে মনিটরিং করা হচ্ছে।” এছাড়া পশুর স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও ওজন নির্ধারণের জন্য হাটে রাখা হয়েছে পশু চিকিৎসক, ওজন মাপার বুথ ও ওষুধের ব্যবস্থা, যা সাধারণ মানুষের মধ্যে বাড়তি আস্থা সৃষ্টি করেছে।
গরু বিক্রেতা মিজানুর রহমান জানান, “চার মাস ধরে গরু লালন-পালন করছি। এবারের খরচ অনেক বেশি গেছে, তাই দাম একটু বেশি চাইছি। তবে হাটের পরিবেশ ভালো, অনেকেই গরু কিনছেন। শেষ সময় হলে আরও ভালো বিক্রি হবে আশা করি।” অপরদিকে, হাটে গরু দেখতে আসা ক্রেতা আবদুর রহিম বলেন, “দাম একটু বেশি হলেও দরদাম করলে ভালো গরু পাওয়া যাচ্ছে। দেশি গরুর চাহিদা এবার বেশি। স্বাস্থ্য ভালো, দেখে কেনা যাচ্ছে।”
সার্বিকভাবে হাটের পরিবেশ, ব্যবস্থাপনা ও পশুর মান নিয়ে ক্রেতা-বিক্রেতারা সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। অনেকেই বলছেন, সময় যত গড়াবে, হাটে পশুর সরবরাহ আরও বাড়বে এবং দরদামে স্থিতিশীলতা আসবে। তবে স্থানীয় প্রশাসনের নজরদারির কারণে হাটে বিশৃঙ্খলা বা অনিয়মের সুযোগ খুব একটা নেই বলেও মনে করছেন অনেকে।