সরকারি কর্মচারীদের জন্য বিশেষ সুখবর: ১০–১৫ শতাংশ হারে ‘বিশেষ সুবিধা’, প্রজ্ঞাপন জারি

নিজেস্ব প্রতিবেদন:

সরকারি চাকরিজীবীদের জন্য বহুল প্রতীক্ষিত মহার্ঘ ভাতার পরিবর্তে এবার ‘বিশেষ সুবিধা’ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। ২০২৫ সালের ১ জুলাই থেকে এই সুবিধা কার্যকর হবে। অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগের এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে।

প্রজ্ঞাপন অনুসারে, জাতীয় বেতন স্কেলের আওতাভুক্ত সরকারি–বেসামরিক, স্বশাসিত ও আধা–স্বশাসিত সংস্থা, রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান, ব্যাংক, বিমা, আর্থিক প্রতিষ্ঠান, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি), পুলিশ বাহিনীসহ অন্যান্য সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের কর্মরত কর্মকর্তা–কর্মচারী এবং পেনশনভোগীরা এই বিশেষ আর্থিক সুবিধা পাবেন।

নির্ধারিত হারে বিশেষ সুবিধা প্রদানের ক্ষেত্রে বেতন গ্রেডভেদে ভিন্নতা থাকবে। ১ নম্বর গ্রেড থেকে ৯ নম্বর গ্রেড পর্যন্ত কর্মচারীদের জন্য ১০ শতাংশ এবং ১০ নম্বর থেকে ২০ নম্বর গ্রেড পর্যন্ত কর্মচারীদের জন্য ১৫ শতাংশ হারে এই বিশেষ ভাতা দেওয়া হবে। তবে চাকরিরত কর্মচারীদের জন্য এই সুবিধার ন্যূনতম পরিমাণ হবে ১,০০০ টাকা এবং পেনশনভোগীদের জন্য তা হবে ন্যূনতম ৫০০ টাকা।

প্রজ্ঞাপনে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, যেসব কর্মচারী বর্তমানে অবসরোত্তর ছুটিতে (PRL) আছেন, তাঁরাও পিআরএলে যাওয়ার সময়ের সর্বশেষ মূল বেতনের ভিত্তিতে নির্ধারিত গ্রেড অনুযায়ী এই সুবিধা পাবেন। আবার যেসব পেনশনভোগীদের পেনশন পুনঃস্থাপন করা হয়েছে, তাঁরাও পেনশনের প্রাপ্য অংশের ওপর ভিত্তি করে এই বিশেষ সুবিধা ভোগ করবেন।

তবে কিছু ব্যতিক্রমও রয়েছে। যেসব অবসরপ্রাপ্ত কর্মচারী তাঁদের সম্পূর্ণ পেনশন এককালীন আনুতোষিক হিসেবে তুলে নিয়েছেন এবং এখনো পেনশন পুনঃস্থাপনের যোগ্য হননি, তাঁদের জন্য এই সুবিধা প্রযোজ্য হবে না। একইভাবে, যেসব কর্মচারী বিনা বেতনে ছুটিতে রয়েছেন, তাঁরাও এই সুবিধার আওতায় আসবেন না।

এই ঘোষণাটি এসেছে ২০২৫–২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট বক্তৃতার পরদিন। অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ বাজেট বক্তৃতায় বলেন, “২০১৫ সালের পর থেকে নতুন কোনো বেতন কাঠামো কার্যকর না হওয়ায় সরকারি কর্মচারীদের আর্থিক সুরক্ষা বিবেচনায় নিয়ে আমরা এই বিশেষ সুবিধার পরিমাণ বৃদ্ধির প্রস্তাব করেছি।”

সাম্প্রতিক সময়ে সরকারি কর্মচারীদের মহার্ঘ ভাতা চালুর বিষয়ে ব্যাপক আলোচনা চলছিল। অর্থ উপদেষ্টা সাংবাদিকদের জানান, “মহার্ঘ ভাতা বিষয়টি আমরা সক্রিয়ভাবে বিবেচনা করছি। একটি কমিটিকে এ বিষয়ে কাজ করতে বলা হয়েছে। ভবিষ্যতে হয়তো মহার্ঘ ভাতা কার্যকর করা সম্ভব হবে। তবে এই মুহূর্তে বিশেষ সুবিধা হিসেবেই এটি চালু করা হচ্ছে।”

সরকারি কর্মচারীদের দীর্ঘদিনের প্রত্যাশা আংশিক পূরণ করল এই বিশেষ সুবিধা ঘোষণা। এটি কর্মীদের জীবনযাত্রার ব্যয় মেটাতে কিছুটা হলেও স্বস্তি আনবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।