রাঙ্গামাটির বিলাইছড়িতে টানা বৃষ্টিতে ভূমিধস: আতঙ্কে এলাকা, বিচ্ছিন্ন যোগাযোগ ব্যবস্থা
মোঃ মোজাফ্ফর আহমেদ (আফজাল)
বিলাইছড়ি উপজেলা প্রতিনিধি, রাঙ্গামাটি
রাঙ্গামাটির দুর্গম পাহাড়ি উপজেলা বিলাইছড়িতে টানা বৃষ্টিপাতে দেখা দিয়েছে ভয়াবহ ভূমিধস ও পাহাড়ি ঢলের আশঙ্কা। এতে আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন এলাকাবাসী। বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে, পাহাড়ি ঢলে নষ্ট হয়েছে ধানখেত ও সবজির ক্ষেত, এবং ভেঙে পড়েছে বসতঘর। বৃহস্পতিবার (৩০ মে) থেকে শুরু হওয়া ভারী বর্ষণ পরিস্থিতিকে আরও শোচনীয় করে তুলেছে।
বিলাইছড়ি উপজেলাধীন ২নং কেংড়াছড়ি ইউনিয়নের অন্তত ১৫-২০টি বাড়িতে ভূমিধসের খবর পাওয়া গেছে। সাংবাদিকদের নিজস্ব ঘরবাড়িসহ অনেক ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানা গেছে। এর ফলে বাসিন্দাদের মাঝে চরম উৎকণ্ঠা বিরাজ করছে।
এমন ভয়াবহ পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে উপজেলা প্রশাসন দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড়ি এলাকাগুলোর মানুষদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়ার কাজ চলছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুহাম্মদ মামুনুল হক বলেন,
“টানা বর্ষণে সৃষ্ট ভূমিধসের ঝুঁকি বিবেচনায় ১৭টি গ্রাম/পাড়াকে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এর মধ্যে ১৫টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে, যেখানে নিরাপদে আশ্রয় নেওয়ার জন্য স্থানীয়দের আহ্বান জানানো হচ্ছে।”
তিনি আরও জানান, জরুরি সেবাদানকারীদের সক্রিয় রাখা হয়েছে এবং যেসব এলাকা যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে, সেখানে উদ্ধার কার্যক্রম ও ত্রাণ সহায়তা পাঠানোর ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
স্থানীয়রা জানাচ্ছেন, এই মুহূর্তে সবচেয়ে বড় সংকট দেখা দিয়েছে খাবার ও বিশুদ্ধ পানির। ভূমিধসের কারণে অনেক বাড়ি ঘরেই পানি ঢুকে পড়েছে এবং খাদ্যসামগ্রীও নষ্ট হয়ে গেছে।
স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন,
“রাতের বেলায় ভূমিধসের শব্দে ঘুম ভেঙে যায়, এখন পাহাড় ধসে পড়ার ভয় নিয়ে বাচ্চাদের নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে আছি।”
প্রাকৃতিক দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় বর্ষাকাল এলেই পাহাড়ি অঞ্চলের এমন দুরবস্থা নিয়মিত হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবে এবারের পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ রূপ নিয়েছে বলেই মনে করছেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনের কর্মকর্তারা।
প্রশাসন আশ্বাস দিয়েছে, ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা প্রণয়ন করে দ্রুত ত্রাণসামগ্রী বিতরণ ও পূর্ণবাসনের উদ্যোগ নেওয়া হবে।