হারুন অর রশিদ, ষ্টাফ রিপোর্টার:
দেশের জ্বালানি বাজারে ফের সুখবর। জুন মাসের জন্য ডিজেল, পেট্রল ও অকটেনের দাম কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের জারি করা প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, নতুন এই দাম আগামীকাল শনিবার, ১ জুন ২০২৫ থেকে কার্যকর হবে।
সরকারি প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়েছে, ডিজেলের দাম লিটারে ২ টাকা কমিয়ে ১০৪ টাকা থেকে ১০২ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। একইভাবে, পেট্রলের দাম ১২১ টাকা থেকে ১১৮ টাকা এবং অকটেনের দাম ১২৫ টাকা থেকে কমিয়ে ১২২ টাকা করা হয়েছে। তবে কেরোসিনের দাম অপরিবর্তিত রেখে আগের মতোই ১১৪ টাকা রাখা হয়েছে।
উল্লেখ্য, চলতি বছরের এপ্রিল মাসে জ্বালানি তেলের দাম অপরিবর্তিত রাখা হয়েছিল। এরপর মে মাসে প্রতি লিটারে ১ টাকা করে কমানো হয় ডিজেল, পেট্রল ও অকটেনের দাম। জুনে এসে দ্বিতীয় দফায় বড় পরিসরে দাম হ্রাস পেলো, যা দেশের ভোক্তাদের জন্য স্বস্তির বার্তা বয়ে আনছে।
২০২৪ সালের ২৯ ফেব্রুয়ারি সরকার ‘স্বয়ংক্রিয় মূল্য নির্ধারণ ব্যবস্থা’ চালু করে একটি নির্দেশিকা প্রকাশ করে। সেই নির্দেশিকার ভিত্তিতেই প্রতি মাসে আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে জ্বালানি তেলের দাম সমন্বয় করা হচ্ছে।
নির্দেশিকায় বলা হয়, “অকটেন ও পেট্রল মূলত ব্যক্তিগত যানবাহনে ব্যবহৃত হয়। বাস্তবতার নিরিখে এগুলোকে বিলাসপণ্য (লাক্সারি আইটেম) হিসেবে বিবেচনা করা হয় এবং সেজন্য এগুলোর দাম ডিজেলের তুলনায় তুলনামূলক বেশি রাখা হয়।”
এই নীতির ফলে সরকার এখন প্রতি মাসের শেষ দিকে বিশ্ববাজারে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দামের ওঠানামা বিশ্লেষণ করে দেশের অভ্যন্তরীণ বাজারে দাম নির্ধারণ করছে। অর্থাৎ, বাংলাদেশে আর আগের মতো এককালীন দাম বাড়ানো বা কমানোর বদলে, বাজার-নির্ভর এবং নিয়মিত সমন্বয়মূলক পদ্ধতির মাধ্যমে দাম নির্ধারণ করা হচ্ছে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, জ্বালানি তেলের দামে এই ধারাবাহিক ছাড় দেশের অর্থনীতিতে কিছুটা হলেও ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে। বিশেষ করে পরিবহন খাতে ডিজেলের মূল্য কমায় বাস-ট্রাকসহ বিভিন্ন পণ্যবাহী যানবাহনের খরচ কিছুটা কমবে, যা শেষমেশ নিত্যপণ্যের দামে ইতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।
তবে পরিবহন মালিক ও শ্রমিক সংগঠনগুলোর দাবি, জ্বালানি খরচ কমলেও অন্যান্য খাতে ব্যয় বেড়েছে, ফলে ভাড়ার হারে তাৎক্ষণিক প্রভাব পড়বে না।