
ঈদের ছুটিতে পূর্ণতা পেয়েছে চট্টগ্রামের পর্যটন কেন্দ্রগুলো
মোহাম্মদ সিরাজুল মনির চট্টগ্রাম ব্যুরো
অন্যান্য বারের তুলনায় চলতি বছরের ঈদের টানা ছুটি থাকার কারণে চট্টগ্রামের পর্যটন কেন্দ্র গুলো যেন পূর্ণতা পেয়েছে। লক্ষ লক্ষ লোকের ভ্রমণ পিপাসুর ভিড়ে মুখরিত ছিল চট্টগ্রাম জেলা এবং আশেপাশের জেলার পর্যটন কেন্দ্র সমূহ।
চট্টগ্রামের পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকত ফয়েজ লেক সী ওয়ার্ল্ড চিড়িয়াখানা স্বাধীনতা পার্ক সহ অন্যান্য পর্যটন এলাকাগুলো পর্যটকদের ভাড়ে মুখরীতি ছিল সেই ঈদের দিন থেকে। সরকারিভাবে নয় দিনের ছুটি থাকার কারণে এবারের ঈদে যেন নতুন আনন্দ যোগ হয়েছে। শিশু থেকে শুরু করে বয়স্ক বৃদ্ধ পর্যন্ত কেউ বাদ যায়নি পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে আসা-যাওয়া করা। বিশেষ করে ঈদের দিন সকালে নামাজ শেষ করে ঘুরে বেড়ানোর জন্য বেরিয়ে পড়েছিল শিশু থেকে শুরু করে বৃদ্ধ পর্যন্ত সকল বয়সের লোকজন।
চট্টগ্রামের পাশের জেলা কক্সবাজারে ছিল লোকে লোকারণ্য হোটেল হোটেল গুলো পরিপূর্ণ ছিল আগত পর্যটকদের ভিড়ে। অনেকের ঘুম না পেয়ে বীচ এলাকায় রাত কাটিয়ে দেয়ার ও ঘটনা ঘটেছে। জিয়া গেস্ট হাউস এর স্বত্বাধিকারী শফিকুর রহমান জানান অন্যান্য অন্যান্যবার ঈদে এ ধরনের পর্যটক সাধারণত দেখা যায়নি। চলতি বছরের ঈদে মানুষ লম্বা ছুটি পাওয়ায় পরিবারের সকল সদস্যসহ কক্সবাজারে ঘুরতে চলে এসেছে। পর্যটকদের রুম দিতে হিমশিমকার ছিল হোটেল মালিকগণ। নিরাপত্তার কোন ঘাটতি ছিল না প্রশাসনের পক্ষ থেকে। কক্সবাজার জেলা প্রশাসনিক সূত্রে জানা যায় পর্যটকদের নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে হাইওয়ে পুলিশের সমন্বয়ে আলাদা টিম গঠন করা হয়েছে। প্রশাসন যথেষ্ট নিরাপত্তা দিতে নিশ্চিত করেছিল সব সময়।
ঢাকার আজিমপুরের বাসিন্দা আলাউদ্দিন একটি বিদেশী সংস্থায় চাকরি করে। তিনি স্বতঃস্ফূর্তভাবে জানান এবারের মত ঈদ তেমন কোন বছর পালন করা হয়নি। নয় দিনের ছুটি থাকার কারণে ঈদের পরের দিন পরিবার-পরিজন নিয়ে ছুটে এসেছে কক্সবাজারে। ঈদের প্রায় পুরো ছুটিটাই তিনি কক্সবাজারে কাটাতে চান বলে জানান। এ সময় ঘুরতে পেরে পরিবারের সদস্যরা অনেক খুশি বলেও তিনি জানান। প্রশাসনের পক্ষ থেকে যথেষ্ট নিরাপত্তা ছিল বলে সন্তুষ্ট হয়ে তিনি জানান আগের থেকে অনেকটা নিরাপত্তা বেড়েছে তাই বীচ এলাকায় এমন কোন সমস্যায় পড়তে হয়নি।
প্রায় সারা দেশ থেকে ঘুরতে এসেছে কক্সবাজারে তরুণ থেকে শুরু করে অনেকেই। ড্যাফোডিল ইউনিভার্সিটি ছাত্র আব্দুল কাইয়ুম বলেন তার গ্রামের বাড়ি রাজশাহী হলেও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়েছে কদিন আগেই ঈদের নামাজ শেষ করেই গ্রামের বাড়ি রাজশাহী থেকে ১০ জন বন্ধুর সমন্বয়ে একটি টিম গঠন করে তারা চট্টগ্রাম বিভাগের কক্সবাজার রাঙামাটি বান্দরবন খাগড়াছড়ি ভ্রমণের উদ্দেশ্যে বেরিয়ে পড়েছে।
চট্টগ্রাম সমুদ্র সৈকত পতেঙ্গায় ঘুরতে আসা নগরের বাকলিয়ার বাসিন্দা ইসরাফিল আলম বলেন নগরীর পাশাপাশি হওয়া সত্বেও পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকতে তেমন আসা হয় না কিন্তু এই ঈদের সময় গত তিন দিন ধরে এই সমুদ্র সৈকতে ঘুরতে আসে বিশেষ করে সন্ধ্যাবেলায়। পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকত নতুন রূপে গড়ে ওঠার কারণে ভিন্নমাত্রায় রূপ নিয়েছে বীচ এলাকা। পর্যাপ্ত পরিমাণে নিরাপত্তা থাকার কারণে পর্যটকরা ঘুরে স্বস্তি পেয়েছে অনেকেই। চট্টগ্রাম সিটি মেয়র ডাক্তার শাহাদাত হোসেন বলেন এবছর পর্যটকদের কথা চিন্তা পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের সমন্বয়ে। তিনি বলেন পর্যটকরা যাতে নির্বিঘ্নে পর্যটন এলাকাগুলোতে ঘোরাফেরা করতে পারে দারুন জন্য সর্বোচ্চ নজরদারি নিশ্চিত করা হয়েছে প্রশাসনের পক্ষ থেকে।
সব মিলিয়ে চট্টগ্রাম এবং আশেপাশের জেলাগুলোর পর্যটন কেন্দ্র গুলো পর্যটকদের ভাড়ে মুখরিতি ছিল ঈদের দিন থেকেই। অনেক আনন্দের সহিত ভ্রমন পিপাসুরা ঘুরে বেড়িয়েছে এক পর্যটন কেন্দ্র থেকে অন্য পর্যটন কেন্দ্রে। এক কথায় পর্যটকদের ঢল নেমেছিল পুরো পর্যটন এলাকায়। পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে যাওয়ার জন্য ঈদের আগের সময়ের মতো ঈদ পরবর্তী সময়ে বাস ও ট্রেনের টিকিট পেতে হিমশিম খেতে হয়েছে ভ্রমন পিপাসুদের।