
নতুন স্বাধীনতার প্রথম ঈদযাত্রা।
চব্বিশের ছাত্র-জনতার বিপ্লবের পর এবারই প্রথম ঈদ উৎযাপন করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। অতীতে ঈদ অভিজ্ঞতা যদি কেউ শেয়ার করে তাহলে শুনতে পাবেন রেলপথ, সড়কপথ এবং জলপথে ঘরমুখো মানুষের ঘরে ফেরার এক তিক্ত অভিজ্ঞতার কথা। পরিবহন মালিকেরা এই সময়কে ব্যবসায়ের মৌসুম হিসেবে ধরে ফিটনেস বিহীন যানবাহন রাস্তায় নামিয়ে ধারণ ক্ষমতার তিন গুণ যাত্রী নিয়ে ঈদ যাত্রাকে জাহান্নাম বানিয়ে ফেলতো। আর যাত্রা পথে দূর্ঘটনা তো ছিলো নিত্যসঙ্গী। কত তাজা প্রাণ যে ঝরে গিয়ে ঈদের আনন্দকে শোকের মাতমে পরিণত করতো তার কোনো ইয়ত্তা নেই। ঈদ বোনাস আদায়ের নামে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় হতো চাঁদাবাজির আরেকটা উৎস। সড়ক ও জলপথ শুধু নয়, রেলের ছাঁদেও চ্যাঙদোলা করে যাত্রী নিয়ে যাওয়ার দৃশ্য ছিলো অহরহ! অথচ রেল,সড়ক ও নৌ পরিবহন কর্তৃপক্ষ এ ব্যপারে ছিলো নির্বিকার! সড়কপথে চাঁদাবাজির ছিলো অবাধ লাইসেন্স! কিন্তু ড.ইউনূসের প্রথম ইন্টারিম সরকার এবার কি ভেলকি দেখাচ্ছে। রেল,বাস,লঞ্চ স্টেশনে নেই কোনো ঘরমুখো মানুষের উপচে পড়া ভিড়। আসনের অতিরিক্ত যাত্রী কিংবা অতিরিক্ত ভাড়া দেওয়ার কোনো বালাই নেই। সড়কে কাজ করছে ভোক্তা অধিকারের একাধিক মোবাইল টহল টিম। অনিয়ম করলেই গুনতে হচ্ছে জরিমানা। যাত্রীরা তো মহাখুশি। অনেকে তো ড.ইউনূসের বর্তমান সরকারকে আরও দীর্ঘ সময় দেশের জন্য কাজ করতে দিতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। অথচ বিগত দিনের শাসকরা শুধু দেশটাকে লুটপাট করার মহোৎসবে ব্যস্ত ছিলো। জনগণের রক্ষক হয়ে ক্ষমতায় বসে শুধু জনগণকেই চুষে খেয়েছে।বর্তমান সরকারের এসব কর্মকান্ডে শুধু যাত্রীরাই খুশি নয়। গার্মেন্টস,মিল-কারখানায় কর্মরত শ্রমিকরাও যারপরনাই খুশি। কারণ সরকারের শ্রম উপদেষ্টা গার্মেন্টস ও মিল মালিকদের একপ্রকার বাধ্য করেছেন শ্রমিকদের বেতন ও বোনাস পরিশোধ করতে। কারাখানার গাড়ি বিক্রি করে দিয়ে শ্রমিকের পাওনা পরিশোধের নজির পর্যন্ত রেখেছেন। আমরা এমন একটি জনবান্ধন সরকারকেই এতদিন অন্তর থেকে চেয়েছি।কিন্তু জনগণের রক্ত চোষার দল চায়না এমন একটি জনবান্ধন সরকার এদেশের প্রতিনিধিত্ব করুক। তাইতো ইনিয়ে বিনিয়ে নানান ছলচাতুরী করে এই সরকারের বিরুদ্ধে নানান বিষেদাগার ছড়াচ্ছে। আমাদের জনগণকে এ ব্যপারে চোখ কান খোলা রাখতে হবে। জনগণের অধিকারের কথা বলে জনগণকে ব্যবহার করে জনগণকেই নিঃস্ব করেছে সুবিধাবাদীরা। এদেশবাসী আর সেই একই ভুল করতে চায় না। আমরা চাই দেশের ঐক্য, শান্তি ও সমৃদ্ধি। পরিবারতন্ত্র ও স্বৈরতন্ত্রের নিপাত যাক, বাংলাদেশের জনগণ মুক্তি পাক।
লেখকঃ (পল্লী চিকিৎসক ও তরুণ রাজনীতিবিদ।)