
জামালপুর সদরের গোপালপুর ইউনিয়ন এ শুরু হয়েছে জামাই মেলা।
মোঃ রবিন আলী জামালপুর জেলা প্রতিনিধি
জামালপুরের গোপালপুর ‘জামাই মেলা’ গত শনিবার শুরু হয়েছে, চলবে আগামী বুধবার পর্যন্ত। এবার রমজান মাসে আয়োজিত হলেও স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে উৎসাহ-উদ্দীপনার কোনো কমতি নেই। সোমবার গিয়ে দেখা যায়, এ মেলা কেন্দ্র করেই আশপাশের বিভিন্ন এলাকায় এখন বইছে উৎসবের আমেজ।
প্রতিবছর ১-৫ চৈত্র (সনাতন পঞ্জিকা অনুসারে) সদর উপজেলার ঝাওলা গোপালপুর বহুমুখী উচ্চবিদ্যালয় মাঠ ও এর আশপাশে এই মেলা বসে। একে কেন্দ্র করে এলাকার জামাইয়েরা শ্বশুরবাড়ি বেড়াতে আসেন। এ কারণেই মেলাটি ‘জামাই মেলা’ হিসেবে পরিচিত। আর জামাইয়েরাই মেলার মূল আকর্ষণ। পাঁচ দিনের এই মেলায় সদর উপজেলার গোপালপুর, নরুন্দি, ঘোড়াধাপ, ইটাইল, বাঁশচড়া, তুলসীরটর, লক্ষ্মীরচর, রানাগাছা ও প্রতিবেশী ময়মনসিংহের চেচুয়া এলাকাসহ আশপাশের লাখো মানুষের সমাগম ঘটে।
রমজান মাস সকালে মেলায় তুলনামূলক কম লোকজন থাকলেও তিল ধারণের ঠাঁই থাকে না। কয়েকজন ব্যবসায়ী জানান, গভীর রাত পর্যন্ত শিশু, নারী-পুরুষের ব্যাপক ভিড় থাকে। জামাইদের সবচেয়ে বেশি ভিড় চোখে পড়ে দুপুরের ঠিক পরপর।
মেলায় প্রসাধনী, খাবার, খেলনা, মিঠাই-মিষ্টান্ন, মাছ, ফার্নিচারসহ বিভিন্ন ধরনের পাঁচ শতাধিক দোকান আছে। আছে চটপটি-ফুচকা থেকে মুখরোচক নানা পদের খাবারের দোকানও। শিশুদের বিনোদনের জন্য আছে নাগরদোলা, চরকি, দোলনাসহ নানা আয়োজন। সাজিয়ে রাখা হয়েছে বিভিন্ন সাইজের ছোট-বড় মিষ্টি। এ ছাড়া বিশেষ আকর্ষণ হিসেবে আছে বালিশ মিষ্টি। এসব মিষ্টি জামাইয়েরা কিনে শ্বশুরবাড়িতে নিয়ে যান।
তবে এই মেলার উৎপত্তি নিয়ে সঠিক তথ্য দিতে পারেননি কেউ। আয়োজক কমিটি সূত্রে জানা যায়, যুগ যুগ ধরে এই মেলা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। তবে গোপালপুর বাজারে একটি বিশাল বটগাছ ছিল। ওই বটগাছের নিচে বারুণী স্নান উপলক্ষে হিন্দুসম্প্রদায়ের নারী-পুরুষ জড়ো হতেন। তখন ওই বটগাছের নিয়ে মেলায় হতো। এরপর চৈত্র মেলা হিসেবে ব্রিটিশ আমলে শুরু হলেও এখন এটি বিলুপ্তির দিকে।