ছাত্ররাজনীতি বন্ধের দাবিকে কেন্দ্র করে খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুয়েট) ছাত্রদল ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মীদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।
আজ মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) দুপুর থেকে দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া চলে, যা ক্যাম্পাসের বাইরে পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ে।
খানজাহান আলী থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কবির হোসেন সংঘর্ষের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
স্থানীয়রা জানান, দুপুরে শিক্ষার্থীরা ছাত্ররাজনীতি বন্ধের দাবিতে মিছিল নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র হলগুলো প্রদক্ষিণ করেন। এ সময় তারা ‘এই ক্যাম্পাসে হবে না, ছাত্ররাজনীতির ঠিকানা’, ‘ছাত্ররাজনীতির ঠিকানা, এই কুয়েটে হবে না’, ‘দাবি মোদের একটাই, রাজনীতিমুক্ত ক্যাম্পাস চাই’ স্লোগান দেন।
পরে কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের সামনে শিক্ষার্থীদের দুই গ্রুপের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়। এক পর্যায়ে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া শুরু হয় এবং তা কুয়েট ক্যাম্পাসের বাইরেও ছড়িয়ে পড়ে। বর্তমানে ক্যাম্পাসের চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে।
শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করে বলেছেন, ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতি ফেরানো, শিক্ষার্থীদের মারধর, মাইক কেড়ে নেওয়াসহ বিভিন্ন অভিযোগ এনে ছাত্ররাজনীতি বন্ধের দাবিতে বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের ধাওয়া দেন তারা। পরে ভিসির বাসভবনের সামনে অবরোধ করে বিভিন্ন দাবিতে বিক্ষোভ শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। দুপুরে ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা একত্রিত হয়ে ক্যাম্পাসে প্রবেশ করলে সংঘর্ষ বাঁধে।
প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, সংঘর্ষের সময় ছাত্রদল নেতাকর্মীদের অস্ত্র হাতে দেখা যায়। সংঘর্ষ কুয়েটের প্রধান ফটক ছাড়িয়ে সংলগ্ন রাস্তায় ছড়িয়ে পড়ে। ছাত্রদলের পক্ষ নিয়ে বহিরাগতদেরও সংঘর্ষে জড়ানোর অভিযোগ উঠেছে।
তবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মীরা দাবি করেছেন, ছাত্রদল ক্যাম্পাসে রাজনৈতিক অস্থিরতা তৈরি করতে চায়। শিক্ষার্থী মুজাহিদ ও উৎপল বলেন, ‘ছাত্রদল ক্যাম্পাসে রাজনীতি চালুর চেষ্টা করছে। তারা সাধারণ শিক্ষার্থীদের উসকানি দিয়ে হামলা চালিয়েছে এবং আমাদের মাইক কেড়ে নিয়েছে। আমরা চাই, এই ঘটনায় জড়িতদের আজীবন বহিষ্কার করা হোক।’
অন্যদিকে, ছাত্রদলের এক নেতা দাবি করেন, তারা কোনো ধরনের উত্তেজনা তৈরি করেননি। বরং তাদের ওপর প্রথম হামলা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘আমরা একাডেমিক ভবন থেকে ওমর একুশে হলের দিকে যাচ্ছিলাম। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মীরা মিছিল নিয়ে আসার সময় হঠাৎ আমাদের হুমকি দিয়ে ইফাজের ওপর হামলা চালায়। এরপর আমরা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে চুপচাপ চলে যাচ্ছিলাম, কিন্তু হলের কাছে পৌঁছাতেই তারা আমাদের চারদিক থেকে ঘিরে মারধর করে।’