স্টাফ রিপোর্টার
যশোরের চৌগাছায় তিনদিন ব্যাপী অনুষ্ঠিত ব্যতিক্রম এক মেলা গুড়ের মেলার বৃহস্পতিবার ছিলো দ্বিতীয় দিন। দ্বিতীয় দিনেও কাক ডাকা ভোর হতে উপজেলা চত্বরে অনুষ্ঠিত মেলায় মানুষের উপচে পড়া ভিড় লক্ষ করা গেছে। সব বয়সের মানুষের সরব উপস্থিতি গুড় মেলা যেন মিলন মেলাতে পরিনত হয়। আগামীতে গুড় মেলার সময় আরও বৃদ্ধির দাবি জানান মেলায় আগত অনেকে।
বৃহস্পতিবার ছিলো চৌগাছার গুড় মেলার দ্বিতীয় দিন। সকাল থেকেই মেলায় আসতে থাকে শিশু, নারী এমনকি বয়োবৃদ্ধরা। মেলায় মানুষের এতটাই ভিড় ছিলো যে আয়োজক কমিটি উপজেলা প্রশাসনকে রীতিমত হিমশীম খেতে হয়েছে। কারও ভিতরে ছিলো না কোন, রাগ বা অভিমান, সকলেই প্রানের এই মেলাকে আরও প্রানবন্ত করে তুলতে যেন চেষ্টা করে গেছেন। মেলার প্রান গাছি ও খেজুরের গুড়ের ব্যাপক সমারোহ ছিলো দ্বিতীয় দিনেও। তবে গুড়ের এতটাই চাহিদা ছিলো যে, দুপুরের মধ্যে অনেকেরই গুড় বিক্রি শেষ হয়ে যায়। গুড় মেলাকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন সংগঠন শীতের পিঠা পুলি নিয়ে হাজির হন মেলাতে। এসব ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান তাদের তৈরী পিঠা পুলি বিক্রি করে বেজায় আনন্দ পেয়েছেন।
কথা হয় উপজেলার উপজেলার কয়ারপাড়া গ্রামের গাছি তারেক গাজী, পাতিবিলা গ্রামের নজরুল ইসলামের সাথে। এসকল গাছিরা জানান, গত দুই বছরের চেয়ে এবছর মেলায় মানুষের ব্যাপক ভিড়। আমরা ক্রেতাদের হাতে গুড় দিয়ে পারছি না। এ ছাড়া মেলার সার্বিক পরিবেশ খুবই ভালো, এ ধরনের মেলার সময় বৃদ্ধি হওয়া জরুরী বলে তারা মনে করছেন।
হরেক রকমের পিঠা ও দেশী মুরগীর গোস্ত নিয়ে স্টল দিয়েছেন চৌগাছার সরকারী কলেজের শিক্ষার্থীরা। বেলা বাড়ার সাথে সাথে তাদের স্টলে বাড়তে থাকে ভিড়। এক সময় শুরু হয় ধুম বেচা কেনা। শিক্ষার্থী সাইমা ইসলাম বলেন, গুড় মেলাতে আমরা ব্যতিক্রম একটি স্টল দিয়েছি। উপজেলা প্রশাসনে সার্বিক সহযোগীতায় মেলায় আগতদের নিকট হতে যথেষ্ঠ পরিমানে আমরা সাড়া পেয়েছি। আমাদের তৈরী পিঠা পুলি খেয়ে মানুষ বেজায় মজা পাচ্ছেন। সরকারী কলেজের অধ্যক্ষ রেজাউর রহমান বলেন, আমার ছেলে মেয়েরা নতুন এই স্টল দেয়ার মনস্থির করে আমি তাদের সহযোগীতা করেছি, তাদের স্টলে ব্যাপক বেচাকেনা হচ্ছে।
দর্শনার্থী রাজু আহমেদ, মহিদুল ইসলাম, উম্মে সালমা, লিটন হোসেন বলেন, গুড়ের মেলাতে আসতে পেরে আমরা নিজেদেরকে ধন্য মনে করছি। ব্যতিক্রম এই মেলার আয়োজক কমিটিকে ধন্যবাদ না দিলে নিজেদেরকে ছোট মনে হবে, কেননা এই মেলা দেশ তো বটেই দেশের বাইরেও ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। মেলার সময় বৃদ্ধি করা হলে আরও ভালো হবে বলে তারা মনে করেন।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার সুস্মিতা সাহা বলেন, খেজুরের গুড় জিআই পন্যের তালিকা ভুক্ত হওয়ার পর এবারই প্রথম গুড় মেলা হচ্ছে। প্রথম দিকে কিছুটা ভাবনায় ছিলাম কেমন হবে মেলা, তবে মেলায় অংশ নেয়া গাছি ও সাধারণ মানুষের সরব উপস্থিতি আমাদের সেই ভাবনা দুর করেছে। সব মিলিয়ে গুড় মেলার দ্বিতীয় দিন সুন্দর ভাবে পার হয়েছে।