সিরিয়ার নতুন প্রশাসন সাবেক প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের সরকারের অধীনে হাজার হাজার বিরোধী নেতাকে মৃত্যুদণ্ড দেয়ার অভিযোগে এক বিচারপতিকে গ্রেপ্তার করেছে। সিরিয়া ওয়ার মনিটার সংস্থা জানিয়েছে, সিরিয়ার নতুন সরকার এখন পুরনো সরকারের ‘হত্যাকারী’দের খুঁজে বের করে তাদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিচ্ছে।
সিরিয়া ওয়ার মনিটার সংস্থার বরাত দিয়ে ডয়চে ভেলে’র এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সিরিয়ার সাবেক স্বৈশাসক প্রেসিডেন্ট বাশার আসাদের সরকারের আমলে হাজার হাজার বিরোধীদের গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের জেলে আটক করে নির্যাতন করা হয়েছে। এছাড়া বহু মানুষকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। নতুন সরকার এসে সাবেক আমলের হত্যাকারীদের আটক করতে শুরু করেছে।
সিরিয়ার মানবাধিকার কমিশন জানিয়েছে, যে বিচারপতিকে গ্রেফতার করা হয়েছে, তার নাম মোহাম্মেদ কানজো হাসান। টারটাস অঞ্চল থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আসাদের সঙ্গে তার অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল বলে দাবি করা হয়েছে। ওই বিচারপতির সঙ্গে আরও ২০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তারা ওই বিচারপতির সহযোগী বলে জানানো হয়েছে। সেনা বিচারালয়ে ওই বিচারপতি হাজার হাজার বিদ্রোহীদের মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন বলে অভিযোগ।
২০১১ থেকে ২০১৪ পর্যন্ত সিরিয়ার মিলিটারি ফিল্ড কোর্ট বা সেনা আদালতের প্রধান ছিলেন কানজো। ২০১১ সালেই সিরিয়ায় গৃহযুদ্ধ শুরু হয়। এরপর গোটা সিরিয়ার সেনা আদালতের প্রধান হিসেবে পদন্নোতি হয় তার। অভিযোগ এই সময়ে, এক মিনিটেরও কম সময়ে বিচার প্রক্রিয়া শেষ করে দিতেন কানজো। ওই সময়ের মধ্যেই তিনি মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়ে দিতেন। অর্থাৎ, কার্যত বিনা বিচারে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হতো বিদ্রোহীদের।
সিরিয়ার অন্যতম চর্চিত জেলের নাম সিডনায়া। নির্যাতন, বিচার বহির্ভূত হত্যার জন্য পরিচিত এই কুখ্যাত জেল ছিল আসাদের তৈরি। এখানেই বিদ্রোহাদের ঢুকিয়ে নির্যাতন চালানো হতো। রাজধানী দামাস্ক থেকে ৩৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত এই জেল। ২০১১ সাল থেকে এই জেলে অন্তত ৩০ হাজার মানুষকে বন্দি করা হয়েছে বলে বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য। তার মধ্যে মাত্র ছয় হাজার ব্যক্তি পরে ছাড়া পেয়েছেন। অধিকাংশ মানুষ এখনো নিখোঁজ। রয়টার্স, এএফপি