চট্টগ্রামে বহুল আলোচিত ১০ ট্রাক অস্ত্র চোরাচালানের মামলায় জামায়াতে ইসলামীর প্রয়াত আমির মাওলানা মতিউর রহমান নিজামীসহ সাতজনকে মৃত্যুদণ্ড ও অর্থদণ্ড থেকে খালাস দিয়েছেন হাইকোর্ট।
আজ বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি নাসরিন আক্তারের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করেন।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সুলতানা আক্তার রুবী ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসিফ ইমরান জিসান। আসামিপক্ষে শুনানিতে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এস এম শাহজাহান, আইনজীবী মোহাম্মদ আহসান ও মোহাম্মদ শিশির মনির। এছাড়া পলাতক আসামির পক্ষে ছিলেন রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী হাসনা বেগম।
রায়ের পর মাওলানা নিজামীর ছেলে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার নাজিব মোমেন বলেন, মাওলানা নিজামী যে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার হয়েছিলেন, আজকের রায়ে আবারও তা প্রমাণ হলো।
রায়ে মৃত্যুদণ্ড পাওয়া সাত আসামিকে খালাস দেওয়া হয়। এর মধ্যে রয়েছেন সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, এনএসআইয়ের সাবেক মহাপরিচালক মেজর জেনারেল (অব.) রেজ্জাকুল হায়দার চৌধুরী, সিইউএফএলের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক মহসিন তালুকদার, সাবেক মহাব্যবস্থাপক (প্রশাসন) এ কে এম এনামুল হক, এবং জামায়াতের সাবেক আমির মাওলানা মতিউর রহমান নিজামী। এ ছাড়া উলফার সামরিক কমান্ডার পরেশ বড়ুয়াকে মৃত্যুদণ্ড থেকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত করা হয়।
মামলায় খালাসপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আব্দুর রহিম মারা যাওয়ায় তার ক্ষেত্রে মামলা অকার্যকর ঘোষণা করা হয়। অন্যদিকে, ১০ বছরের সাজাপ্রাপ্ত অন্য আসামিরা হলেন আকবর হোসেন, লিয়াকত, সাহাবুদ্দিন, হাফিজ, মঈনুদ্দিন এবং হাজী আব্দুস সোবহান।
২০০৪ সালের ১ এপ্রিল চট্টগ্রামের সিইউএফএল ঘাটে ১০ ট্রাক অস্ত্রের চালান আটক করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এরপর কর্ণফুলী থানায় অস্ত্র আইন ও বিশেষ ক্ষমতা আইনে দুটি মামলা দায়ের করা হয়। ২০১৪ সালের ৩০ জানুয়ারি চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ আদালত ও বিশেষ ট্রাইব্যুনাল-১ মামলার রায়ে ১৪ জন আসামিকে মৃত্যুদণ্ড দেন। এরপর আসামিরা আপিল করলে হাইকোর্ট ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের ওপর দীর্ঘ শুনানি শেষে আজকের রায় ঘোষণা করেন।