বিশেষ সংবাদদাতা
রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত রাখতে না পারলে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারবে না। তাই সৎ ও দক্ষ ব্যক্তিদের দিয়ে কমিশন গঠন করতে হবে। দুদক সংস্কার কমিশনের প্রধান ও ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বার্হী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বললেন, দুদক শক্তিশালী না হলে দেশ থেকে দুর্নীতি কমানো কঠিন হবে।
দুদকের সাবেক মহাপরিচালক মইদুল ইসলাম বলেন, যাদের বিরুদ্ধে এতদিন ব্যবস্থা নেয়া সম্ভব হয়নি, পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে এখন সেই সুযোগ এসেছে। তাই দ্রুত কমিশন গঠন জরুরি। নয়তো কমিশনের কার্যক্রমে আরও স্থবিরতা নেমে আসবে।
২০২১ সালে দায়িত্ব নিয়ে প্রভাবশালীদের আইনের আওতায় আনার ঘোষণা দিয়েছিলেন দুদকের সদ্য পদত্যাগী চেয়ারম্যান মঈনউদ্দীন আবদুল্লাহ। তবে যতটা গর্জন, ততটা বর্ষণ ছিল না। দুর্নীতি, ঘুষ ও অর্থপাচারের ঘটনায় চুনোপুঁটিদের বিরুদ্ধে সোচ্চার থাকলেও রুই-কাতলাদের বিষয়ে কমিশন ছিল নীরব।
আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর সুবিধাভোগীদের বিরুদ্ধে শত শত অভিযোগ জমা পড়ছে সারাদেশে। অনুসন্ধানও শুরু হয় কারও কারও বিষয়ে। এই অবস্থায় কমিশনের পদত্যাগে স্থবিরতা দেখা দিয়েছে সার্বিক কার্যক্রমে। সংস্থাটির বর্তমান কমিশনের পদত্যাগকে কীভাবে দেখছেন দুদক সংস্কার কমিশনের প্রধান?
ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেছেন, বিশেষ করে যারা ক্ষমতার দৃষ্টিতে থাকে, তাদের বিচার বা যথাযথ জবাবদিহিতা গ্রহণ করতে ব্যর্থ হয়েছে। যারা দুদক থেকে পদত্যাগ করেছেন, তারা এর সবোর্চ্চ দৃষ্টান্ত ছিল।
দুদকের সাবেক মহাপরিচালক মঈদুল ইসলাম বলছেন, বিচারাধীন ও নতুন নতুন মামলার চাপ সামলাতে হলে দ্রুত কমিশন গঠন করতে হবে।
এ নিয়ে তার ব্যাখ্যা, যে সমস্ত অনুসন্ধান বা তদন্ত চলমান আছে, সেগুলো তদন্ত কর্মকর্তারা চালিয়ে যেতে পারবেন। কিন্তু বর্তমান অবস্থায় প্রতিবেদন জমা দেয়ার পর কোনো কাজ এগোবে না। নতুন করে কোনো অনুসন্ধান নিতেও পারবে না। নতুন করে মামলা চালু করতে পারছে না। কাজেই সেদিক থেকে এটা খুব জরুরি।
ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, অতীতে এই সংস্থায় দলীয় বিবেচনায় নিয়োগের ফলে সুফল মেলেনি। দুদক জন্মের পর থেকে যে সমস্যার মুখোমুখি হয়েছে, তা থেকে উত্তোরণে এখন বড় সুযোগ। দলীয় বিবেচনার ঊর্ধ্বে থেকে দল নিরপেক্ষ ও যোগ্য ব্যক্তিকে এমনভাবে নিয়োগ দেয়া হবে, যারা তাদের ব্যক্তি ও পেশাগত জীবনে সততা, সৎ সাহস, দৃঢ়তা ও শুদ্ধচারের সাথে তাদের ওপর অর্পিত দায়িত্বটা পালন করেছেন।
বিগত সরকারের সময়ে যে দুর্নীতি ও অনিয়ম হয়েছে, সেগুলোর যথাযথ অনুসন্ধান ও ব্যবস্থা নিতে হলে দুদককে স্বাধীনভাবে কাজ করার ক্ষেত্র তৈরি করে দিতে হবে মনে করেন টিআইবি পরিচালক।