খুলনা ওয়াসার এমডি মো. আবদুল্লাহর ১৫ বছরের রাজত্বে পদোন্নতি:বঞ্চিত কর্মচারীদের ক্ষোভের বিস্ফোরণ
তারিকুল ইসলাম আলভী, খুলনা
প্রকৌশলী মো. আবদুল্লাহ ২০০৯ সালের ২৫ অক্টোবর খুলনা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক পদে নিয়োগ পাওয়ার পর থেকে গত ১৫ বছর ধরে ছিলেন এ প্রতিষ্ঠানের সর্বময় কর্তা। এই সময়ের মধ্যে উপব্যবস্থাপনা পরিচালকের দুটি পদ ইচ্ছাকৃতভাবে শূন্য রেখে, অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ পদে নিয়োগ বা পদোন্নতি না দিয়ে নিজের ক্ষমতা অক্ষুণ্ন রাখার অভিযোগ রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে।
প্রকৌশলী, কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অভিযোগ করেন, এমডি আবদুল্লাহ ‘স্বৈরতান্ত্রিক’ কায়দায় ওয়াসা পরিচালনা করেছেন, যার ফলে অনেক গুরুত্বপূর্ণ পদ বছরের পর বছর শূন্য থেকেছে। সাম্প্রতিক সময়ে, সরকার পরিবর্তনের পর তিনি বিপাকে পড়লেও কৌশলে বিএনপি ও জামায়াত সমর্থক কর্মচারীদের দিয়ে পদোন্নতির আবেদন করিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছেন।
গত ১৫ দিনে বিভিন্ন পদে পদোন্নতির জন্য ১৫৬ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী আবেদন করেছেন, যার মধ্যে আওয়ামী লীগের সময়ে নিয়োগপ্রাপ্ত কর্মকর্তারাও রয়েছেন। তাঁদের মধ্যে অনেকেই এমডির চুক্তির মেয়াদ নবায়নের চেষ্টা করছেন। আগামী ১৬ অক্টোবর তাঁর চুক্তির মেয়াদ শেষ হবে, কিন্তু এর আগেই পদোন্নতি নিশ্চিত করতে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা দৌড়ঝাঁপ করছেন।
এদিকে, এমডির অপসারণ দাবিতে নাগরিক সংগঠনগুলো মানববন্ধন ও স্মারকলিপি প্রদান করেছে। তবে আওয়ামী লীগ নেতাদের সাথে সম্পর্কের মাধ্যমে এমডি আবদুল্লাহ তাঁর চুক্তির মেয়াদ পুনঃবৃদ্ধি করেছিলেন।
একটি সূত্র জানিয়েছে, প্রতিদিনই কেউ না কেউ এমডির অপসারণের দাবিতে ওয়াসা ভবনে যাচ্ছেন, কিন্তু কর্মকর্তারা তাঁদের নিবৃত্ত করছেন। অন্যদিকে, এমডি মো. আবদুল্লাহ জানান, তিনি ওয়াসাকে সন্তানের মতো গড়ে তুলেছেন এবং বিদায়ের সময় সবার মুখে হাসি রেখে যেতে চান। তিনি সব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “আমি কখনও কোনো অনিয়ম ও দুর্নীতিতে জড়িত ছিলাম না।”