স্টাফ রিপোর্টার
চৌগাছায় এক সময়কার প্রভাবশালীরা সরকারী খাস জমি হতে অবৈধ ভাবে বালি তুলে সৃষ্টি করেছে গভীর গর্তের। সম্প্রতি বৃষ্টিপাতে ওই গর্তের চারিপাশে সৃষ্টি হয়েছে ভাঙ্গন, ফসলি জমি, আম বাগানের জমি ভেঙ্গে বিলিন হচ্ছে গর্তে। এমনকি বসত বাড়ি, পাকা সড়কও রয়েছে হুমকির মুখে। চাষযোগ্য জমি হারিয়ে দিশেহারা কৃষক। ভুক্তভোগীরা দ্রুত ভাঙ্গনরোধে সরকারের দৃষ্টি কামনা করেছেন।
উপজেলার জগদীশপুর গ্রামে অবস্থিত দক্ষিন এশিয়ার সর্ববৃহৎ তুলা গবেষনা ও বীজ বর্ধন খামার। উপজেলা সদর থেকে পাকা সড়ক বেয়ে খামারে যেতে মাঝপথে পড়বে বিশ্বনাথপুর গ্রাম। এই গ্রামের পুর্বে খালি মাঠের মধ্যে জগদীশপুর গ্রামের মৃত দুদা মাষ্টারের ছেলে পিন্টুর নেতৃত্বে ওহিদুল ইসলাম, শোভন হোসেন, রমজান গংরা সরকারী সম্পত্তি থেকে বছরের পর বছর ধরে অবৈধ ভাবে বালি তুলে তা বিক্রি করে করেছেন। অবৈধ বালি তোলার কারনে ওই স্থানে সৃষ্টি হয়েছে গর্তের। সম্প্রতি একটানা বৃষ্টিতে পানির স্রোতে গর্তের দক্ষিনে একই গ্রামের আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে বিদুতের ১ বিঘা জমির ধরন্ত পটল ক্ষেতের প্রায় অর্ধেক গর্তে গিলে খেয়েছে। কোন ভাবেই ভাঙ্গনরোধ করতে পারছে না অসহায় কৃষক। যে কোন সময় ভাঙ্গতে পারে কৃষক সুরোত আলী বিশ্বাসের ৩ বিঘা তুলা, আলী কদরের ২ বিঘা ধানের জমি, সাখাওয়াত হোসেনের ১ বিঘা, মুক্তির ১ বিঘা সেলিম রেজার ১ বিঘা, নজরুল ইসলামের দেড় বিঘা ধানের জমি।
গতকাল সরেজমিনে দেখা গেছে, অসহায় চাষিরা তাদের জমি রক্ষায় বৃথা চেষ্টা করে যাচ্ছে। কি ভাবে ভাঙ্গন হতে ফসলি জমি রক্ষা করবে তার কোন সদুত্তর খুজে পাচ্ছেনা তারা। এসময় কথা কৃষক বিদুতের সাথে তিনি বলেন, গ্রামের পিন্টুসহ বেশ কয়েকজন ব্যক্তি বছরের পর বছর ধরে বালি তোলার কারনে আজ এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। আলী কদর, সাখাওয়াত হোসেনসহ একাধিক চাষি বলেন, পাকা সড়ক হতে মাঠে যাওয়ার জন্য ৩২ ফুট চওড়া একটি সড়ক ছিলো। ১/১ খতিয়ানের জমি, যার দাগ নং ৬৬৬ এবং জমির পরিমান ৬৬ শতাংশ। প্রায় ৪/৫ বছর আগে গ্রামের পিন্টুসহ বেশ কয়েকজন সরকারী জমি হতে বালি তোলা শুরু করে। আমরা নিষেধ করা সত্তেও কোন ভাবে তারা বন্ধ করেননি। বালি তুলতে তুলতে এখন সেখানে গভীর গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। কয়েক দিনের বৃষ্টিতে পানির স্রোতে গর্তে নেমেছে আর ভেঙ্গেছে ফসলি জমি। বর্তমানে গর্তের চারিপাশে বড় বড় ফাঁটল দেখা দিয়েছে। যে কোন সময় আরও ভাঙ্গন হতে পারে। চোখের সামনে ফসলি জমি গর্তে বিলিন হতে দেখেছি কিন্তু রক্ষা করতে পারেনি। ভাঙ্গন রোধ সম্ভব না হলে শুধু ফসলি জমি না গর্তের পশ্চিম পাশে আম বাগান, বসতবাড়ি এবং উত্তরে পাকা সড়কও এই গর্তে বিলিন হওয়ার সম্ভবনা দেখা দিয়েছে। কি ভাবে আমরা ভাঙ্গন রোধ করবো তার কোন কুল কিনারা পাচ্ছিনা। ভুক্তভোগী কৃষকরা বলেন, সরকারী ভাবে যদি এর কোন ব্যবস্থা করা না হয় তাহলে আমাদের পথে বসতে হবে।
এ বিষয়ে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট গুঞ্জন বিশ্বাস বলেন, বালি তোলার বিষয়টি আমার জানা ছিল, সে সময়ে অভিযান চালিয়ে সেটি বন্ধও করা হয়। তবে বৃষ্টিতে ভাঙ্গনের সৃষ্টি হয়েছে বিষয়টি অজানা খোঁজ নিয়ে দেখা হচ্ছে।