স্টাফ রিপোর্টার
চৌগাছায় এক রাতের বৃষ্টিতে বিভিন্ন এলাকা এখনও পানির নিচে বলে খবর পাওয়া গেছে। বিশেষ করে নিচু এলাকার বিল গুলোতে থৈথৈ করছে পানি। এ সকল বিল হতে আগে পানি বের হতো, কিন্তু সমাজের কতিপয় ব্যক্তিরা তাদের ইচ্ছামত পানি বের হওয়া জায়গা বিভিন্ন ভাবে ভরাট করার ফলে সৃষ্টি হচ্ছে জলাবদ্ধতা আর ক্ষতির মুখে পড়ছেন প্রান্তিক চাষিরা। যে সকল ব্যক্তি বিল বা খালের মুখ বন্ধ করে কৃষকের অপুরোনীয় ক্ষতি করেছেন তাদের নিকট হতে ক্ষতি আদায়ের দাবি উঠেছে সর্বমহল থেকে।
চৌগাছার বাকপাড়া বিল, ইরি ও বোরো ধান চাষের জন্য বরাবরই বিখ্যাত। বৃষ্টির পানি বের হওয়ার জন্য এই বিলের একটি ছোট্ট কালভার্ট আছে। প্রতি বছর বর্ষা হলে ওই কালভার্ট দিয়ে পানি বের হয়ে তা রাইসার বিল হয়ে কপোতাক্ষ নদে পড়ত। সম্প্রতি ওই কালভার্টের মুখে মাটি ফেলে বন্ধ করেছেন একজন প্রভাবশালী ব্যক্তি। যার ফলে গত রোববার সারা রাতের বৃষ্টিতে বিল ভরে পানি উঠেছে মানুষের বসত বাড়িতে। শুধুমাত্র পল্লবী ক্লিনিকে লাখ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে আর কৃষকের ক্ষতি অপুরোনীয়। এই বিলে ধানচাষ করা একাধিক চাষি বলেন, একজন ব্যক্তির কারনে শতশত বিঘার ধান পানির নিচে পচে গলে নষ্ট হয়েছে। এই ক্ষতি কৃষকের কখনও পুরোন হওয়ার নই। চৌগাছা সদর ইউনিয়নের কড়াইতলা বিলের একই অবস্থা। স্থানীয় কৃষক শাহিনুর রহমান, লিটন হোসেন, মোঃ সায়েম বলেন, একজন প্রভাবশালী ব্যক্তি এখানে কয়েক বিঘা জমি ক্রয় করেছেন। তার সুবিধার জন্য কেনা জমির উপর দিয়ে একটি সড়ক তৈরী করেছেন। যার কারনে বৃষ্টির পানি বের হওয়ার কোন সুযোগ নেই। গত দুই দিনে ৩ থেকে ৪শ বিঘা জমির সবজি ও রোপা আমন পানির নিচে। মঙ্গলবার কৃষকের আহাজারি জানতে পেরে উপজেলা প্রশাসনের লোকজন ভেকু দিয়ে সড়ক কেটে পানি বের করার ব্যবস্থা করেছেন।
এ দিকে উপজেলার পাশাপোল ইউনিয়নের হোগল বিলে শতশত বিঘা ধান পানির নিচে বলে খবর পাওয়া গেছে। বিলের পানি এ্যড়োলের খাল দিয়ে পাশে হালসার বুকভার বাওড়ে নামে। গোবিন্দপুর এলাকায় বিলের ভিতরে সরকারী জমিতে সুবিধাভোগীরা একাধিক ভেঁড়ি তৈরী করায় বিলের পানি ধীর গতিতে বের হচ্ছে। ফলে সৃষ্টি হয়েছে জলাবদ্ধতা। পাশাপোল গ্রামের মাছ চাষি সাইফুল ইসলাম বলেন, তার নিজ এলাকায় ১৮ বিঘা জমিতে একটি পুকুর ছিল। বিলের পানি ভরে পুকুরে চলে আসে এতে করে সমুদয় মাছ বের হয়ে গেছে। এতে তার ১৭/ ১৮ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। স্থানীয় কৃষক স্বপন মন্ডল, আফাল বিশ্বাস, তারিক বিশ্বাস, আজিজুর রহমান বলেন, বিগত বছর গুলোতে বিলের পানি বের হওয়া মুখে ভৈঁড়ি তৈরীর মহাৎসব চলেছে। এক শ্রেনীর মানুষ তাদের স্বপ্ন পুরোনে তৈরী করেছে ভেঁড়ি আর শতশত কৃষকের স্বপ্ন ভঙ্গ করেছে। এবছর বিলে রোপা আমন ধান না হওয়ার সম্ভবনাই বেশি।
ভুক্তভোগী এলাকাবাসি মনে করছেন, যে সকল ব্যক্তি নিজের স্বার্থ উদ্ধারে হাজারও কৃষকের ক্ষতি করেছে তাদের নিকট হতে ক্ষতিগ্রস্থ্য চাষিদের ক্ষতিপুরোন আদায় করে দেয়া উচিত।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মুসাব্বির হুসাইন বলেন, মঙ্গলবার সকালে খবর পেয়ে আমরা উপজেলার কড়াইতলা মাঠে যেয়ে সড়ক কেটে পানি বের করার ব্যবস্থা করেছি। আশা করছি ওই মাঠের সব ধরনের ফসলের ক্ষতি তুলনা মুলক কম হবে।