1. dailysonbad@gmail.com : বার্তা বিভাগ : বার্তা বিভাগ
  2. newsroom@dailysongbad71.com : বার্তা বিভাগ : বার্তা বিভাগ
রবিবার, ০৬ অক্টোবর ২০২৪, ০৭:০৯ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম
সংবিধান বাতিলের দাবি জানিয়েছেন সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ বিরামপুরে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সাথে বিএনপি’র শারদীয় শুভেচ্ছা ও মতবিনিময় মাদ্রাসা শিক্ষকরাও পাবেন ইএফটিতে বেতন মাশরাফি বিন মুর্তজার আজ জন্মদিন দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে কলাইখেতে হেলিকপ্টার অবতরণ বিশ্ব শিক্ষক দিবস ও শিক্ষকদের প্রত্যাশা চুয়াডাঙ্গার জীবননগরে স্কুলছাত্রীকে নিয়ে উধাও পুলিশ সদস্য। সাবেক রাষ্ট্রপতি অধ্যাপক ডা. একিউএম বদরুদ্দোজা চৌধুরীর ইন্তেকাল,আগামীকাল দাফন বোরহানউদ্দিনে ফুটবল টুর্নামেন্টের ফাইনাল খেলা অনুষ্ঠিত- চ্যাম্পিয়ান হাকিমুউদ্দিন বাজার একাদশ হোমনার মাকসুদ অপহরণের ৬ ঘন্টা পর পুলিশের অভিযানে উদ্ধার

শিক্ষার্থী ও তরুণরা মাদক সেবনে ঝুঁকছে রূপগঞ্জে ৩শ’ মাদকের স্পটে সক্রিয় ৩০/৩৫সিন্ডিকেট

হাবিবুল্লাহ মীর
  • আপডেট টাইম : মঙ্গলবার, ২০ আগস্ট, ২০২৪
  • ১৮ বার দেখা হয়েছে

শিক্ষার্থী ও তরুণরা মাদক সেবনে ঝুঁকছে
রূপগঞ্জে ৩শ’ মাদকের স্পটে সক্রিয় ৩০/৩৫সিন্ডিকেট

হাবিবুল্লাহ মীর

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার মুড়াপাড়া, ভুলতা কাঞ্চন, তারাবো, ভোলাবো, দাউদপুর, গোলাকান্দাইল, রূপগঞ্জসহ আশপাশের এলাকায় তিন শতাধিক মাদকের স্পট রয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। চনপাড়া পুনর্বাসন কেন্দ্রে মাদকের স্পট রয়েছে একশ’র অধিক। এসব মাদকের স্পট নিয়ন্ত্রণে ৩০/৩৫টি সিন্ডিকেট সক্রিয় রয়েছে। খুচরা ব্যবসায়ীর সংখ্যা আরও কয়েকগুণ বেশি। মাদকসেবীর সংখ্যা ২০/২৫হাজার মানুষ। এদের তালিকায় শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে ধর্ণাঢ্য ব্যক্তিরা রয়েছে। ব্যবসায়ী ও জনপ্রতিনিধিদের কারো কারো এ তালিকায় নাম আছে। বছরে এসব মাদকসেবীর অপচয় হয় বিপুল পরিমাণ টাকা। সন্ধ্যার পরপরই মাদক ব্যবসায়ীদের আনাগোনা বেড়ে যায়। সুযোগ পেয়ে শিক্ষার্থী ও তরুণরাও মাদক সেবনে ঝুঁকছে। বর্তমানে নানা প্রতিকূলতায় মাদকবিরোধী অভিযান মুখ থুবড়ে পড়ছে।
রূপগঞ্জের সর্বত্রই যেন চলছে মাদকের রমরমা বাণিজ্য। এখানে ভাংগাড়ি ব্যবসার অন্তরালে মাদক ব্যবসা চলে। উপজেলার গোলাকান্দাইল সাওঘাট এলাকার একটি পরিত্যাক্ত বিল্ডিংয়ের অভ্যন্তরে মাদক মজুদ করা হয়। গোলাকান্দাইল ৫নং ক্যানেল এলাকা, গোলাকান্দাইল উত্তরপাড়া বালুরমাঠ, কালী মজলিসের বাগ, মুসলিমপাড়া কাঁঠবাগান, তারাবো পৌরসভার হাটিপাড়া, নোয়াপাড়া, বরাবো, কায়েতপাড়া ইউনিয়নের নগরপাড়া, বাগবাড়ী, দেলপাড়া, নয়ামাটি, কামশাইর, বরুণা এলাকা রীতিমতো মাদকের ডিপো, রূপগঞ্জ ইউনিয়নের গোয়ালপাড়া ও পূর্বাচল উপশহরে মাদকের সয়লাব। রাতালদিয়া, সাওঘাট, পূর্ব দরিকান্দি, মাছিমপুর,ব্রামনগাও,দেওয়ানবাড়ি, রূপসী ¯সুইসগেট, কালাদি, আতলাশপুর, হাটাবো টেকপাড়া, গন্ধর্বপুর, দক্ষিণ মাসাবোসহ আরও অনেক এলাকায় মাদকের ব্যবসা জমজমাট। এদের মধ্যে কেউ ইয়াবা, কেউ ফেনসিডিল, কেউ হেরোইন আবার কেউবা গাঁজার ব্যবসায়ী।
রূপগঞ্জের চনপাড়া যেন দুর্ভেদ্য মাদক সাম্রাজ্য। সিন্ডিকেটের কয়েকশ’ নারী সরাসরি এ ব্যবসায় জড়িত। কখনও মাদক ব্যবসায় ব্যবহার করা হচ্ছে বেদে বহর, কখনও লবণবাহী সাম্পান আবার সিমেন্টের ক্লিংকারবাহী কার্গো জাহাজ।
মাদকের কালো ছায়ায় অন্ধকার নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ। অল্প সময়ে ধনী হওয়ার আশায় অনেক তরুণ ও নারীও এ পেশায় ঝুঁকছেন। মাদক বহনে শিশু-কিশোরদেরও ব্যবহার করা হচ্ছে। মরণ নেশা গাঁজা, হেরোইন, ইয়াবা, ফেনসিডিল, আইসপিল, টিডিজেসিক ও লুপিজেসিক ইঞ্জেকশনসহ নানা ধরণের মাদকদ্রব্যে এখন হাতের নাগালেই।
এছাড়া ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের কাঁচপুর থেকে আধুরিয়া পর্যন্ত ছোট-বড় প্রায় ৫ শতাধিক শিল্পকারখানা রয়েছে। এসব শিল্পকারখানায় রয়েছে কয়েক লাখ শ্রমিক। এদের মধ্যে বিপুল সংখ্যক শ্রমিক নেশায় জড়িয়ে পড়ছে। এসব শ্রমিকদের অধিকাংশ বহিরাগত। এরা ছোট ছোট খুপরি ঘরে কিংবা মেস ভাড়া করে ঘিঞ্জি পরিবেশে বসবাস করছে। এসব খুপরি ঘরে মাদক ব্যবসায়ীরা ফেরি করে মাদকদ্রব্য সরবরাহ করছে।
সড়ক ও নৌপথে এলাকায় অবাধে মাদকদ্রব্য আসে। মাদক প্রবেশের সবচেয়ে নিরাপদ রুট হচ্ছে বালু নদ। এ নদে পুলিশ টহলের ব্যবস্থা না থাকায় মাদকব্যবসায়ীরা নির্বিঘ্নে ইঞ্জিনচালিত ট্রলারযোগে মাদক আসে। এছাড়া শীতলক্ষ্যা নদী পথে পণ্যবাহী জাহাজে করে মাদক ঢোকে রূপগঞ্জে। সেইসঙ্গে এশিয়ান হাইওয়ে দিয়ে বিভিন্ন যানবাহনে কুমিল্লা ও ব্রাক্ষণবাড়িয়া থেকে মাদক ঢোকে রূপগঞ্জে।
আশুগঞ্জ-ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকেও ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক হয়ে মাদক ঢোকে। ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের ভুলতা হচ্ছে মাদকের ট্রানজিট পয়েন্ট। আখাউড়া, কুমিল্লা, সিলেট ও ব্রাক্ষণবাড়িয়া থেকে মাদক বাস, নাইট কোচ, সংবাদপত্র বহনকারী মোটরসাইকেল কিংবা ট্রাকযোগে ওই এলাকায় আসে।
চনপাড়া বস্তিতে প্রায় ৮০ হাজার মানুষের বসবাস। এখানে মাদক বেচাকেনা চলে প্রকাশ্যে। প্রতি সন্ধ্যায় এই বস্তিতে বসে মাদকের হাট। শুরু হয় কোলাহল। এ রমরমা আসর চলে গভীর রাত পর্যন্ত। এখানে ফেরি করে বিভিন্ন ধরনের মাদক বিক্রি করা হয়। রাজধানীর ডেমরা, সারুলিয়া, যাত্রাবাড়ীসহ ঢাকার বিভিন্ন এলাকার মানুষ চনপাড়া বস্তিতে আসে মাদক সেবন করতে। এখানে মাদক ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ নিয়ে প্রায়ই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। ঘটেছে হত্যাকান্ডের ঘটনাও। স্থানীয় প্রশাসন এখানকার মাদক ব্যবসা নিয়ন্ত্রণে নিতে বরাবরই ব্যর্থ হচ্ছে। মাদকের হাটখ্যাত চনপাড়া বস্তি থেকে থানা পুলিশ, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের কর্মকর্তা, রাজনৈতিক নেতা, সাংবাদিক ও প্রভাবশালীরা নিয়মিত বখরা পায় বলেও অভিযোগ রয়েছে।
ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জ জেলার সীমান্তবর্তী শীতলক্ষ্যা ও বালু নদীর মোহনায় চনপাড়া পুনর্বাসন কেন্দ্র। চনপাড়ায় প্রবেশ ও বের হওয়ার পথ রয়েছে অনেক। একদিকে পুলিশ প্রবেশ করলে মাদকসেবীরা অন্য পথে বের হয়ে যায়। এখানে দিনমজুর, ঠেলাগাড়িচালক, রিকশাচালক, ফেরিওয়ালা, গার্মেন্ট শ্রমিকের পাশাপাশি পেশাদার খুনি, ছিনতাইকারী, অজ্ঞান পার্টির সদস্যরা বাস করে। তাদের অনেকেই মাদক ব্যবসায় জড়িত।
মাদকের বিষাক্ত ছোবলে রূপগঞ্জের হাজার হাজার তরুণের জীবন বিপন্ন। মাদকের টাকা জোগাড় করতে তারা চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই ও খুনসহ নানা অপরাধের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ছে। মাদকসংক্রান্ত দ্বন্দে খুনের ঘটনা তো রয়েছেই। এছাড়া সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটেছে। মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত চুনোপুঁটিরা ধরা পড়লেও রাঘব-বোয়ালরা রয়েছে ধরাছোঁয়ার বাইরে। তবে পুলিশের সঙ্গে মতের অমিল হলেই চলে লোক দেখানো অভিযান। অভিযানের খবর পেয়ে মাদক ব্যবসায়ীরা নিরাপদে চলে যায়। পুলিশের অভিযান ব্যর্থ হয়।
মাদক ব্যবসায়ীরা নানা কৌশলে মাদক বহন করে থাকেন। ইয়াবা ও ফেনসিডিল বহন করা হয় লাউ, নারিকেল আর ম্যাচের বাক্সের ভেতরে করে। হেরোইন বহন করা হয় মিষ্টির প্যাকেটের ভেতরে। আর গাঁজা বহন করা হয় ছালার চটের ভেতরে করে।
মাদক বহনের কাজে ব্যবহার করা হয় শিশু-কিশোরদের। অধিকাংশ ক্ষেত্রে শিশু, কিশোর ও মহিলাদের দিয়ে মাদক বহন করা হয়। মহিলাদের স্পর্শকাতর জায়গায় রেখে ইয়াবা, ফেনসিডিল, হেরোইন ও গাঁজা বহন করা হয়।

রূপগঞ্জ থানা পুলিশ ও স্থানীয়দের তথ্যমতে, গত একযুগে নেশার কাজে বাধা দেয়া ও প্রতিবাদ করায় ২০/২২ জন খুন হয়েছেন। ২০২০ সালে কায়েতপাড়া এলাকায় মাদকের দ্বন্দে খুন হন আনোয়ার হোসেন। একই বছর শিংলাবো এলাকায় মাদক সেবনে বাধা দেয়ায় ছেলে সাইফুল ইসলামের হাতে মা দেলোয়ারা বেগম নিহত হন। রূপসী কাজীপাড়া এলাকায় মাদক ব্যবসায়ীদের হাতে খুন হন রাজন মিয়া। মাদক সেবন করেও গত কয়েক বছরে মারা গেছেন ৪/৫ জন।
রূপগঞ্জ থানার ওসি জুবায়ের হোসেন বলেন, মাদকবিরোধী অভিযান নিয়মিত চলে। রূপগঞ্জে অনেক দুর্গম ও চনপাড়া বস্তি এলাকাটা ঘিঞ্জি। টের পেয়ে পুলিশ ঢোকার আগেই মাদক কারবারিরা নিরাপদে পালিয়ে যায়। এছাড়া গত ৫আগষ্টের পর থেকে নানা প্রতিক‚লতায় পুলিশের স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। পুলিশের স্বাভাবিক কার্যক্রম ফিরে আসলেই মাদকের অভিযান অব্যাহত থাকবে।
নারায়ণগঞ্জ জেলা সহকারী পুলিশ সুপার হাবিবুর রহমান হাবিব বলেন, মাদক ব্যবসায়ীরা কোনো দলের না। তারা দেশ ও জাতির শত্রু। মাদক ব্যবসায়ীদের গ্রেফতারে পুলিশ তৎপর রয়েছে।
রূপগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ আহসান মাহমুদ রাসেল বলেন, মাদক ব্যবসা ও সেবন নির্মূলে সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে সভা-সমাবেশ করা হচ্ছে। এ নিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরাও কাজ করছে। শিগগিরই মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণে সফলতা আসবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন

সামাজিক মিডিয়া এই পোস্ট শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ ক্যাটাগরীর আরো সংবাদ

© 2024, All rights reserved. এই ওয়েবসাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি। এখানে নিজস্ব সংবাদ প্রচার সহ বিভিন্ন পত্রিকার সংবাদ সুত্র সহ প্রকাশ করা হয়। অনুগ্রহ পূর্বক কেহ অভিযোগ করিবেন না। তাছাড়াও কোন অভিযোগ থাকলে ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকের সাথে যোগাযোগ করার জন্য অনুরোধ করা হইলো।
ডিজাইন ও কারিগরি সহযোগিতায়: রায়তাহোস্ট
error: এখানে নিজস্ব সংবাদ প্রচার সহ বিভিন্ন পত্রিকার সংবাদ সুত্র সহ প্রকাশ করা হয়। অনুগ্রহ পূর্বক কেহ অভিযোগ করিবেন না। তাছাড়াও কোন অভিযোগ থাকলে ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকের সাথে যোগাযোগ করার জন্য অনুরোধ করা হইলো।