গত ১৮ জুলাইয়ের ঘটনা। সেদিন বিকেল সাড়ে ৫টা নাগাদ রাজধানীর আজিমপুর সরকারি স্টাফ কোয়ার্টার মসজিদে আসরের নামাজ শেষে লালবাগের আমলিগোলার বাসায় ফিরছিল খালিদ হাসান।
ধানমন্ডির আইডিয়াল কলেজের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী খালিদ কিছুদূর এগোতেই দেখতে পায় আন্দোলনকারীদের একটা দল কলোনির ভেতরে দৌড়ে এসে ঢোকেছে। তারা ঢুকেই এদিক সেদিক ছড়িয়ে পড়ে। হতভম্ব হয়ে ঘটনা বুঝার চেষ্টা করে খালিদ। আর তখনই পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে এলোপাতাড়ি গুলি চালাতে থাকে।
আরও তিন-চারজনের সঙ্গে খালিদও গুলিবিদ্ধ হয়। সেখানেই মারা যায় সে। তার পুরো শরীরে (পেট, বুক) ছিল শটগানের অন্তত ৭০টি গুলির চিহ্ন।
সেদিন ছররা গুলিতে আহত এক প্রত্যক্ষদর্শী সংবাদমাধ্যমকে জানান, সবকিছু এত দ্রুত ঘটেছিল যে তারা কী ঘটছে তা বুঝতে পারেননি। বিক্ষোভকারীরা যখন দৌড়ে ভেতরে আসছিল তারা তখন কলোনি থেকে বের হচ্ছিলেন। তারা কিছু বুঝে ওঠার আগেই এক পুলিশ সদস্য তাদের দিকে বন্দুক তাক করে এবং গুলি চালায়। তার চোখের খুব কাছে ছররা গুলি এসে লাগে।
ভয়ে নাম প্রকাশ না করার শর্তে তিনি বলেন, তাকে ও খালিদকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায় কয়েকজন। খবর পেয়ে খালিদের বাবা কামরুল ঢামেক হাসপাতালে যান।
খালিদের বাবা সংবাদমাধ্যম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘আমি দেখি ও হাসপাতালের বেডে পড়ে আছে। ওর নাক-মুখ দিয়ে রক্ত পড়ছিল। আমার ছেলেটা মরে গেছে।’
কামরুল হাসান বলেন, ‘অনেক আশা ছিল খালিদ আইনজীবী হবে। আমরা গরিব মানুষ। ছেলে চেয়েছিল বড় হয়ে আমাদের যাতে একটু সাহায্য করতে পারে। এখন আমি কার কাছে বিচার চাইব?’
খালিদের মা শুধু একটি কথাই বলেছেন। ‘তারা আমার ছেলেটাকে বাঁচতে দিল না।’