ডাকসুর সাবেক ভিপি ও গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুরকে মিথ্যা মামলায় গ্রেফতার ও রিমান্ডে নিয়ে নির্যাতনের অভিযোগ করেছেন তার স্ত্রী মারিয়া আক্তার।
শনিবার (২৭ জুলাই) বিকেলে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এক সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন তিনি।
এসময় তিনি নুরকে রিমান্ডে নিয়ে ইলেকট্রিক শক দেওয়ার অভিযোগ তুলেন তিনি। মারিয়া আক্তার বলেন, নুরের পা উপরে বেঁধে পেটানো হয়েছে। তার সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করার আহবান জানাই আমি।
সংবাদ সম্মেলনে মারিয়া আক্তার বলেন, শনিবার (২০ জুলাই) ভোর রাতে দরজা ভেঙে কিছু সাদা পোশাক ও কয়েকজন পুলিশ পোশাকে এসে ঘুমন্ত নুরকে তুলে নিয়ে যায়। এর পর ডিবি কার্যালয়, র্যাব কার্যালয় ও হাতিরঝিল থানায় খোঁজ নিলে তারা কোনো তথ্য দেয় নাই। নিরুপায় হয়ে আমি কোর্টে যাই। সেদিন আর কোর্টে তোলেনি। ভেবেছিলাম আমার স্বামীকে আর খুঁজে পাব না। পরে জানতে পারলাম একদিন পর কোর্টে তোলা হবে। গিয়ে যা দেখলাম তা কোনো মানুষ সহ্য করতে পারবে না। গ্রেফতারের পর থেকে তার ওপর নির্যাতন করা হয়েছে। এমন নির্যাতন করা হয়েছে যে নুর নিজের পায়ে হেঁটে আদালতে আসতে পারেনি। পুলিশ সদস্যদের কাঁধে ভর করে আদালতে আসে।
স্ত্রী হিসেবে এমন নির্যাতন কোনোভাবে সহ্য করার মত নয়। অপাশবিক নির্যাতনের পরও তাকে রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে।
নুরের চিকিৎসার দাবি জানিয়ে মারিয়া আক্তার বলেন, আমার অনুরোধ সন্তানের জীবন থেকে বাবার স্নেহ যেন কেড়ে নেওয়া না হয়। আমার সন্তানদের তো অধিকার আছে। এদেশে জন্ম নেওয়াটাই আমাদের পাপ? আমি দাবি জানাই নুরকে আর যেন রিমান্ড নেওয়া না হয়। তার চিকিৎসা ব্যবস্থা যেন করা হয়। প্রয়োজনে আমার স্বামীকে আমি রাজনীতি করতে দিব না। তবুও অনুরোধ আমার স্বামীকে ফিরিয়ে দিন। এমন নির্যাতন হলে নূর বাঁচবে না।
তিনি আরও বলেন, যেদিন ঘুমন্ত নুরকে গ্রেফতার করা হয় সেদিন ১৯৭১ সালের ২৫ শে মার্চের মতো মনে হয়েছিল। আমার বড় সন্তান নুরের গলা ধরে ঘুমিয়েছিল। নুর উঠতে পারছিল না। তারা আমাকে এমনভাবে ধরেছে। মেয়েকে রেখে বাবাকে নিয়ে গেল। আমার মেয়ে ট্রমায় পড়ে গেছে।
এসময় রিমান্ডে ইলেকট্রিক শক দেওয়ার অভিযোগ তুলে মারিয়া বলেন, নুরের পা উপরে বেঁধে পেটানো হয়েছে। ইলেকট্রিক শক দেওয়া হয়েছে। ইনজেকশন দেওয়া হয়েছে, সেটি স্লো পয়জনিং কিনা আমার জানা নেই। অনুরোধ জানাই তার সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করা হোক। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ যারা আছেন তার চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন।
সংবাদ সম্মেলনে নুরের বাবা ইদ্রিস আলী ও পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। এসময় নুরের ছোট ভাইকেও গ্রেফতারের অভিযোগ করেন তারা।