
ঋণের টাকা না পেয়ে ফেইসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে খোকন কাজীর আত্মহত্যা
“সবাই আমাকে মাফ করে দিবেন, আমি আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছি। কিছুক্ষণ পরে আমি আত্মহত্যা করব। চারপাশে অনেক ধারদেনা করেছি। নিজেকে আর সামলাতে পারছি না। একটা লোন হওয়ার কথা ছিলো আজকে- তা হলো না। আমি বউয়ের সকল গহনাগাটি, টাকা পয়সা খরচ করে পথের ভিখারি হয়ে গেছি। আমার বউ অথবা পৃথিবীর কারো দোষ নেই আমার মৃত্যুর জন্য। সকলে আমাকে মাফ করে দিবেন। মা বাবা ভাই বোন সকলে আমাকে মাফ করে দিবেন।”
ঋণের টাকা না পেয়ে ফেইসবুকে এমন স্ট্যাটাস দিয়ে ধারদেনায় ডুবুডুবু চায়ের দোকানদার খোকন কাজী তার নিজের দোকানের ফ্যানের সাথে গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করেছে । গত বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) বরগুনা জেলার আমতলী উপজেলার রেভিনিউ অফিসের মসজিদের পাশে তার নিজের চায়ের দোকানে এমন নির্মম আত্মহত্যা করে। ফেইসবুকে এমন স্ট্যাটাস দেখে তার স্বজনরা দ্রুত ছুটে এসে দেখে দোকানের ফ্যানের সাথে রাশিতে ঝুলে আছে খোকন কাজী।
স্বজনরা তাকে দ্রুত উদ্ধার করে আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে এলে কর্মরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
জানা গেছে, খোকন কাজী বরিশাল শহরের লাকুটিয়া খাসিপুর এলাকার বাসিন্দা ইয়াসিন কাজীর ছেলে।সে ২০২০ সালে আমতলীতে এসে উপজেলা রেভিনিউ অফিসের মসজিদের পাশে একটি চায়ের দোকান দিয়ে ব্যবসা চালিয়ে আসছিল। কিন্তু তার ব্যবসা ভালো চলছিল না। সংসার চালাতে গিয়ে অনেক ধারদেনা করে ফেলে। দুই বছর আগে সে আমতলীর স্থানীয় জনসেবা নামক একটি ঋণদানকারী সংস্থার নিকট থেকে চড়া সুদে ঋণ নিয়ে কিস্তি পরিশোধ করতে হিমশিম খাচ্ছিল। পরবর্তী ঋণ পাওয়ার আশায় ধারদেনা করে সে সম্পূর্ণ কিস্তি পরিশোধ করে । কিন্তু কিস্তি পরিশোধ করার পর উক্ত ঋণদানকারী সংস্থার কাছে এক লক্ষ টাকার ঋণ পাওয়ার জন্য ঋণ প্রস্তাব করে। কিন্তু প্রস্তাবিত এক লক্ষ টাকার ঋণ না পেয়ে দিশেহারা হয়ে আত্মহত্যার পথ বেছে নেয় হতভাগা খোকন কাজী।