এবার ছাগলকাণ্ডে বহুল আলোচিত জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সদ্য সাবেক সদস্য মতিউর রহমানের বান্ধবী আরজিনা খাতুনের সন্ধান পাওয়া গেছে। তিনি ছিলেন মতিউরের অধস্তন কর্মকর্তা, বন্ধুর সহায়তায় তিনিও বানিয়েছেন অবৈধ সম্পদের পাহাড়। রাজস্ব বোর্ডের মূসক মনিটরিং, পরিসংখ্যান ও সমন্বয়ের দ্বিতীয় সচিব এই আরজিনা খাতুন। এর আগে চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউসের উপ-কমিশনার ছিলেন তিনি।
মতিউর রহমানের সঙ্গে নিবিড় সম্পর্কে জড়ানোর পর থেকেই দ্রুত বাড়তে থাকে তার সম্পত্তি। রাজধানীতে ফ্ল্যাট, গ্রামে আলিশান বাড়ি, পরিবারের সদস্যদের নামে বেনামে জমি, বাসায় বিলাসবহুল ইন্টেরিয়র এবং দামি সব আসবাবপত্রসহ কী নেই এই আরজিনা খাতুনের। মাত্র তিন বছরে আরজিনা খাতুন ৫শত ভরি স্বর্ণালংকারের মালিক হয়েছেন। এরমধ্যে ২শত ভরিই চোরাচালানের মাধ্যমে আনা হয়েছে। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) কাছে তার বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ এসেছে।
অন্যদিকে, গত ৫ বছরে নগদ টাকায় অন্তত ৫শত ভরি স্বর্ণ আর ডায়মন্ডের অলংকার কিনেছেন আরজিনা খাতুন। এর মধ্যে ২শত ভরি এক সিঅ্যান্ডএফ ব্যবসায়ীর মাধ্যমে ৩ ধাপে চোরাচালানের মাধ্যমে আনার প্রমাণ দুদকে জমা দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া ২০২২ থেকে শেয়ার ব্যবসাও করেছেন তিনি। এক দিনে ১০ লাখ টাকা বিনিয়োগে দ্বিগুণ লাভের নজিরও আছে তার। মতিউরের সঙ্গে একই ব্রোকারেজ হাউজে শেয়ার ব্যবসায় বিনিয়োগ ছিল আরজিনার। কারসাজি করে আরজিনাকে শেয়ার বাজারে মুনাফা তুলে দেন মতিউরই। তার তিনটি ব্যাংক অ্যাকাউন্টে বিপুল নগদ টাকা ও সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগও রয়েছে।
গত ১০ জুন আরজিনা খাতুনের বিরুদ্ধে দুদকে লিখিত অভিযোগ করেছেন এক ব্যক্তি। এতে বলা হয়, মিথ্যা তথ্য দিয়ে পণ্য আমদানি, মানিলন্ডারিং, স্বর্ণ চোরাচালান চক্রের সঙ্গে যোগসাজস আর দুর্নীতি করে বিপুল সম্পদের মালিক বনেছেন আরজিনা খাতুন। চট্টগ্রামে বদলির পর ২০২২ সালেই গ্রামে তার পরিবারের সদস্যদের নামে অর্ধকোটি টাকার ৫টি জমি কিনেছেন। সেসব জমির দলিলও পাওয়া গেছে। এ ছাড়া গ্রামে আরও প্রায় এক কোটি টাকার জমি বন্ধক নিয়েছেন তিনি।
এদিকে মতিউর-আরজিনার মোবাইল ফোনালাপের অডিও রেকর্ড সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। এতে তাদের মধ্যে স্পর্শকাতর অশ্লীল কথাবার্তার ইঙ্গিতও পাওয়া গেছে।