
যশোরের চৌগাছার উপর দিয়ে প্রবাহমান কপোতাক্ষ নদ খননে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে পক্ষপাত মুলক আচারনের অভিযোগ উঠেছে। বিশেষ করে উপজেলার চৌগাছা সদর ও স্বরুপদাহ ইউনিয়নের মশ্মমপুর এবং মাশিলা গ্রামের মাঝখান দিয়ে বয়ে চলা কপোতাক্ষ খননে এই পক্ষপাতমুলক আচারন করা হচ্ছে। নদের এক পাশে খনন কম করে অন্যপাশে বেশি খনন করা হচ্ছে এমনকি নদের মাটি দিয়ে বসত বাড়ি রাস্তা ফসলি জমি ঢেকে ফেলা হচ্ছে।
খুড়িয়ে খুড়িয়ে চলছে মহাকাবি মাইকেল মধুসুধন দত্তের কপোতাক্ষ নদের চৌগাছা এলাকার খনন কাজ। স্থানীয়দের অভিযোগ ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান গুলো তাদের ইচ্ছামত খনন কাজ করছেন। এক পাশ কাটতে যেয়ে অন্যপাশ আবার ভরাট হওয়ার উপক্রম হচ্ছে। কোন কোন স্থানে নদের জমিতে গড়ে উঠা বসত বাড়ি কিংবা পুকুর বাঁচিয়ে রেখে চলছে খনন কাজ। এবার নদের জমি দখলে নিয়ে ফসল ফলানো জমি রক্ষা করে অন্যপাশের মালিকানা জমিতে পরিমানের চেয়ে বেশি মাটি ফেলার অভিযোগ উঠেছে। এরফলে এলাকাবাসির বসত বাড়ি, রাস্তা এমনকি অনেক গাছপালা নষ্ট হওয়ার উপক্রম হয়েছে। ভুক্তভোগীরা তুলনা মুলক কম ক্ষমতাধর হওয়ায় তাদের উপরই এই খড়গ নেমে এসেছে বলে একাধিক ব্যক্তির সাথে কথা বলে জানা গেছে।
শনিবার সরেজমিনে মাশিলা বিওপি ক্যাম্পের পাশে যেয়ে এই দৃশ্য দেখা মেলে। বিওপি ক্যাম্পের দক্ষিন পাশ দিয়ে একটি সড়ক গ্রামের মাঠে বয়ে গেছে, কিছু দুরেই ভারতের বয়রা বাজার। এই সড়কের পাশে জমা করা হয়েছে পাহাড়সম মাটি। একটু বৃষ্টি হলেই মাটি ধ্বশে ওই সড়কে পড়বে মনে করছেন অনেকে। এ সময় কথা হয় গ্রামের বয়োবৃদ্ধ আলী বকস, আহাদ আলীসহ একাধিক ব্যক্তির সাথে। তারা বলেন, যারা নদ খনন করছেন নিশ্চয় পুরোনো ম্যাপ অনুযায়ী করছেন। ম্যাপ অনুযায়ী খনন করা হলে নদের পূর্বপাশে মশ্মমপুর গ্রামের পাশে খনন কম হচ্ছে এমনকি ওই পাড়ে মাটিও ফেলা হচ্ছে কম। নদের পূর্বপাশে যে পরিমান খনন হচ্ছে তার চেয়ে পশ্চিম পাশে অর্থাৎ মাশিলা এলাকাতে বেশি খনন হচ্ছে এবং মাটি ফেলা হচ্ছে বেশি। আমাদের কথা বলার মত কেউ নেই সে কারনে তারা যেমন খুশি তেমন ভাবে নদ খনন করে চলে যাচ্ছে। একাধিক ব্যক্তি বলেন, মাশিলা গ্রামের চেয়ে মশ্মমপুর গ্রামে মাথাধরা লোকের সংখ্যা বেশি, সে কারনে তারা খনন কাজে নিয়োজিতদের ম্যানেজ করে খনন কাজ করাচ্ছে, শুধু তাই না নদের মাঝখানে সিডিউল মাফিক খনন হচ্ছে না। মেশিন দিয়ে যেনতেন ভাবে নদের মাঝে কাদামাটি তোলা হচ্ছে যা শুধুই লোকদেখানো। সরকারের নেয়া মহা এই কর্মযজ্ঞ কোন ভাবেই যেন গুটি কয়েক মানুষের জন্য বিফলে না যায় সে জন্য এলাকাবাসি সংশ্লিষ্ঠ কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
এ বিষয়ে নদদ খননে নিয়োজিত এক্্েরভিটরের চালক রিয়াজুল ইসলামের কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, আমার কিছুই বলার নেই কর্তৃপক্ষ যে ভাবে কাজ করতে বলেছেন আমি সেই ভাবেই কাজ করে যাচ্ছি।
নদ খনন কাজ দেখা শুনায় নিয়োজিত ম্যানেজার আব্দুল লতিফ বলেন, এ ধরনের একটি ঝামেলা ওই এলাকতে সম্প্রতি তৈরী হয়। তারই প্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার পানি উন্নয়ন বোর্ডের উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষসহ সংশ্লিষ্ঠরা সরেজমিনে এসে মাপযোগ করে সীমানা নির্ধারণ করে গেছে, সেই অনুযায়ী বর্তামানে খনন কাজ চলছে। আর নদের মাঝখানেও সমান ভাবে খনন হচ্ছে বলে তিনি জানান।