পত্রিকান্তরে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, অস্তিত্বহীন প্রতিষ্ঠানের নামে তিন হাজার কোটি টাকা ঋণ মঞ্জুর করে তা আত্মসাতের অভিযোগে করা মামলার তদন্ত চলমান থাকায় দি প্রিমিয়ার ব্যাংকের চার কর্মকর্তার বিদেশ গমনে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন আদালত।
তারা হলেন- দি প্রিমিয়ার ব্যাংক পিএলসির অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও নারায়ণগঞ্জ শাখার ব্যবস্থাপক শহীদ হাসান মল্লিক, ভাইস প্রেসিডেন্ট মুশফিকুল আলম, ফরেন এক্সচেঞ্জ ইনচার্জ দীপক কুমার দেবনাথ ও ক্রেডিট ইনচার্জ মোহাম্মদ মেহেদী হাসান সরকার। তারা প্রত্যেকে ব্যাংকটির নারায়ণগঞ্জ শাখায় কর্মরত আছেন।
রোববার দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার সিনিয়র স্পেশাল জজ মোহাম্মদ আসসামছ জগলুল হোসেন এই কর্মকর্তাদের বিদেশ গমনে নিষেধাজ্ঞা জারি করে আদেশ দেন।
আবেদন সূত্রে জানা যায়, অভিযুক্ত কর্মকর্তারা ব্যাক টু ব্যাক এলসি সুবিধার আড়ালে জালিয়াতি, অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে ৪৩টি সন্দেহভাজন তৈরি পোশাক রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে প্রায় তিন হাজার কোটি টাকা ভুয়া ঋণ মঞ্জুর করে আত্মসাৎপূর্বক তা পাচার করেন। আবেদনে উল্লেখ করা হয়, এ অপরাধে তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ অনুসন্ধানাধীন রয়েছে।
এ ব্যাপারে আমাদের বক্তব্য পরিষ্কার। আর তা হলো, ঐ ব্যাংক কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে ভালো কথা, বিদেশে যাওয়ায় নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে এটাও ভালো কথা, কিন্তু ব্যাংক সেক্টরে এসব কি হচ্ছে? হাজার হাজার কোটি টাকা সাজানো ঋণ দেয়ার আগে মনিটরিং হচ্ছে না কেনো? এসব ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংকের জবাবদিহিতা নেই কেনো? ক্ষুদ্র ও কৃষি ঋণ দেয়ার সময় দফায় দফায় তদন্ত, দফায় দফায় তাগাদা আছে। অথচ, হাজার হাজার কোটি টাকা ঋণ দেয়ার সময় সেসব নিয়ম-কানুনের বালায় নেই, জবাবদিহিতা নেই। সব আইন-কানুন কি শুধু গরিবের বেলায় প্রযোজ্য? এসব প্রশ্নের মিমাংশা না হলে বাংলাদেশের ব্যাংক সেক্টরে এমন অঘটন ঘটতেই থাকবে। তাতে ব্যাংকের উপরে আর সাধারণ মানুষের আস্থা থাকবে না। তাদের বিদেশ যাওয়া আইন দিয়ে আটকিয়ে কোনো কাজের কাজ হবে না। আগে ব্যাংক সেক্টরকে স্পর্শকাতর বিবেচনায় এনে ঢেলে সাজাতে হবে।