1. dailysonbad@gmail.com : বার্তা বিভাগ : বার্তা বিভাগ
  2. newsroom@dailysongbad71.com : বার্তা বিভাগ : বার্তা বিভাগ
বুধবার, ১৪ মে ২০২৫, ০৪:৩৭ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম
উপজেলার উপরেই চাঁদা বাজের হাতে দলিল লেখক ও ব্যবসায়ীরা অতিষ্ঠিত ।। মো. সাকির হাওলাদার  জেলা প্রতিনিধি পটুয়াখালী  যশোরের চৌগাছায় আইন শৃংখলা কমিটির মাসিক সভা অনুষ্ঠিত যশোরের চৌগাছায় ব্যবসায়ীর টাকা ছিনাতাইয়ের অভিযোগে ৪ ছিনতাইকারী আটক আশাশুনির বুধহাটা বাজারে মোটরসাইকেল ও ট্রলির ধাক্কায় এক যুবক নিহত।। শিল্পী ও সাবেক এমপি মমতাজের সাত দিনের রিমান্ড আবেদন দিরাইয়ে ব্যবসায়ীর জায়গা দখল করে খাচ্ছেন প্রভাবশালী। হাইকোর্টের রায়ে রাজনৈতিক দলের রেজিস্ট্রেশন বাতিল ইতিহাসে এটাই প্রথম: প্রধান বিচারপতি প্রথমবার চট্টগ্রামে যাচ্ছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস ৫৪ বছরের সবচেয়ে বড় দুটি অর্জন ৭১ আর ২৪ : তারেক রহমান

সিলেটে পানিবন্দি সাড়ে ৮ লাখ মানুষ, ত্রাণ না পাওয়ার অভিযোগ

বিশেষ সংবাদদাতা
  • আপডেট টাইম : সোমবার, ২৪ জুন, ২০২৪
  • ১৪১ বার দেখা হয়েছে

সিলেটে সাড়ে ৮ লাখ মানুষ পানিবন্দি। আশ্রয়কেন্দ্রে আছেন ১৯ হাজার ৭৩৮ জন। এসব আশ্রয়কেন্দ্রে সরকারি-বেসরকারিভাবে ত্রাণ বিতরণ অব্যাহত আছে। পৌঁছানো হচ্ছে বিশুদ্ধ পানি ও ওষুধপত্র।

তিন দিন ধরে বৃষ্টিপাত না হওয়ায় সিলেট মহানগরের বিভিন্ন এলাকা থেকে পানি নামছে। তবে অনেক নিচু এলাকার সড়ক ও বাসাবাড়ি থেকে পুরো পানি নামেনি এখনো। অন্যদিকে জেলার বিভিন্ন উপজেলায় লোকালয় থেকে পানি কমে যাওয়ায় আশ্রয়কেন্দ্র থেকে বসতবাড়িতে ফিরছেন বাসিন্দারা। তবে যারা বাড়ি ফিরেছেন তারা পোহাচ্ছেন নানা ভোগান্তি। পানি কমার সঙ্গে সঙ্গে বাসাবাড়ি ও রাস্তাঘাটের ক্ষতচিহ্ন ভেসে উঠছে। বিশেষ সংকট দেখা দিয়েছে গোখাদ্যের। এ ছাড়া জমে থাকা নোংরা পানি থেকে তীব্র দুর্গন্ধও ছড়াতে শুরু করেছে এরইমধ্যে।

এদিকে সিলেটে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ায় শর্ত সাপেক্ষে খুলছে বন্ধ থাকা পর্যটনকেন্দ্র। ইতোমধ্যে সিলেটের পর্যটনকেন্দ্রে আসতে শুরু করেছেন পর্যটকরা।

রোববার (২৩ জুন) উপজেলা পর্যটন কমিটি জাফলং পর্যটনকেন্দ্রগুলো চালু করার সিদ্ধান্ত নেয়।

এখন পর্যন্ত সিলেটে সাড়ে ৮ লাখ মানুষ পানিবন্দি। এ ছাড়া ৪ পয়েন্টে বিপৎসীমার উপর দিয়ে বইছে সিলেটের দুটি নদীর পানি। জেলা প্রশাসনের তথ্য মতে, রোববার (২৩ জুন) পর্যন্ত সিলেটে ৮ লাখ ৫২ হাজার ৩৫৭ জন বন্যাকবলিত। এর মধ্যে মহানগরের বাসিন্দা ১৫ হাজার। বর্তমানে মহানগরের ৮টি ওয়ার্ড জেলার ১০৭টি ইউনিয়নে বন্যার পানি রয়েছে।

জানা গেছে, বন্যাকবলিত আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে রয়েছে পর্যাপ্ত ত্রাণের অভাব। সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগে যেসব ত্রাণসামগ্রী সরবরাহ করা হচ্ছে তা চাহিদার তুলনায় কম। বিশুদ্ধ পানির সংকটও রয়েছে এলাকাগুলোতে। গবাদিপশুর খাবার নিয়েও বিপাকে রয়েছেন অনেকে।

টানা বৃষ্টি ও উজানের ঢলে গত ২৭ মে সিলেটে আগাম বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। এতে জেলার সব উপজেলার সাড়ে ৭ লাখ মানুষ আক্রান্ত হন। সেই বন্যার পানি পুরোপুরি নামার আগেই ১৫ জুন ফের কবলিত হয় সিলেট।

পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) জানায়, সিলেটে রোববার বিকেল ৩টায় সুরমা নদীর পানি কানাইঘাট পয়েন্টে বিপৎসীমার ২২ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। তবে এ নদীর পানি সিলেট পয়েন্টে রয়েছে বিপৎসীমার নিচে। একই সময়ে কুশিয়ার নদীর পানি আমলশীদ পয়েন্টে বিপৎসীমার ৪০ সেন্টিমিটার, ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্টে ৯৯ সেন্টিমিটার ও শেরপুর পয়েন্টে ৯ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়।

পানি উন্নয়ন বোর্ড সিলেটের নির্বাহী প্রকৌশলী দীপক রঞ্জন দাশ বলেন, ফেঞ্চুগঞ্জের উজানে রয়েছে জুড়ী নদী। এ ছাড়া মনু ও কুশিয়ারা নদী শেরপুরে এসে যুক্ত হয়েছে। ফলে কুশিয়ারা নদীর পানি নামছে ধীর গতিতে। তা ছাড়া ডাউন-স্ট্রিম এর প্রায় সব এলাকা প্লাবিত। এটাও বন্যার পানি ধীর গতিতে নামার একটি কারণ। তবে বৃষ্টিপাত না হলে এবং সিলেট অঞ্চলে প্রতিদিন রোদ হলে বন্যার পানি কমা অব্যাহত থাকবে।

সিলেটের কোম্পানীগঞ্জের বাসিন্দা দিনমজুর তোফাজ্জল মিয়া কালবেলাকে বলেন, সবকিছু শেষ হয়ে গেছে এবারের বন্যায়। ঘরের অনেক কিছু পানিতে ভেসে গেছে। আশ্রয়কেন্দ্র উঠার পর খাবার ও ত্রাণ কিছু পেয়েছিলাম। কিন্তু আশ্রয়কেন্দ্র ছেড়ে ঘরে শনিবার আসলেও অনেকের ধারে ধারে গিয়েও ত্রাণ পাইনি। সরকারি ত্রাণও ভাগ্যে জুটছে না। ছেলে মেয়েসহ পরিবার নিয়ে কষ্টে আছি।

জৈন্তাপুরের হরিপুর গ্রামের আমজাদ আলি কালবেলাকে বলেন, যাদের প্রয়োজন নেই তারা ত্রাণ পাচ্ছে। আর আমরা কষ্টে থাকলে ত্রাণের দেখা পাচ্ছি না।

রোববার আশ্রয়কেন্দ্র থেকে বাড়ি ফিরেন জৈন্তাপুরের সাজু আহমদ। তিনি কালবেলাকে বলেন, কয়েক দিন আশ্রয়কেন্দ্রে ছিলাম। মাথাগোঁজার ঠাঁই ছিল। কিছু একটা খাবারও মিলতো। কিন্তু এখন বাড়ি ফিরে আরও বিপদে পড়েছি। পানিতে পুরো ঘর ভেঙে গেছে। ঘরে কিছু জমানো ধান ছিল। সেগুলোও পানিতে ভেসে গেছে। এখন থাকবো কোথায় আর খাবো কি।

গোয়াইনঘাটের নন্দিরগাঁও ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের নন্দিরগাঁও গ্রামের বাসিন্দা কলমদর আলি কালবেলাকে বলেন, বন্যার পানি যখন ঘরে উঠে যায় তখন পরিবারের সকলকে নিয়ে আত্মীয়ের বাড়িতে থাকি। এখন পানি কমার সঙ্গে সঙ্গে নিজ বাড়িতে এসে দেখি ঘরের মধ্যে কাঁদা এবং চুলা পানিতে ভিজে মাটিতেই মিশে রয়েছে। এখন আমরা চৌকির উপরে চুলা তৈরি করে রান্না করছি। ঘরের মাটির বেড়া ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নষ্ট হয়ে পড়েছে। এখন কি করি। এদিকে নেই কর্ম, অন্যদিকে ঘরের এই অবস্থা।

গোয়াইনঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. তৌহিদুল ইসলাম বলেন, ‘উপজেলার পর্যটনকেন্দ্রগুলো শর্ত সাপেক্ষে রোববার দুপুর থেকে খুলে দেওয়া হয়েছে। তবে পর্যটনকেন্দ্রে পর্যটক, ট্যুর অপারেটর ও নৌকার মাঝিসহ সকলকে অবশ্যই নির্দেশনা মেনে চলতে হবে।’

সিলেট জেলা প্রশাসক শেখ রাসেল হাসান জানান, সিলেটে বন্যা পরিস্থিতির অনেকটা উন্নতি হয়েছে। বন্যার সার্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের জন্য জেলা প্রশাসকের কার্যালয় এবং উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়গুলোতে স্থাপিত কন্ট্রোল রুমে কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। এ ছাড়া প্রতিটি উপজেলায় ডেডিকেটেড অফিসার নিয়োগের পাশাপাশি প্রতিটি ইউনিয়নে ট্যাগ অফিসার নিয়োগ করা হয়েছে। বন্যার্তদের স্বাস্থ্যসেবা প্রদানের জন্য ইউনিয়নভিত্তিক মেডিকেল টিম গঠন করে কার্যক্রম চালানো হচ্ছে। তবে আগামী ২৮ জুন থেকে সিলেট অঞ্চলে ভারি বৃষ্টিপাতের আশঙ্কা রয়েছে।

তিনি বলেন, গত শুক্রবার থেকে কোম্পানীগঞ্জ ও জৈন্তাপুর উপজেলায় ঘণ্টায় ৬০০ লিটার উৎপাদন ক্ষমতাসম্পন্ন পানি বিশুদ্ধকরণ প্ল্যান্ট স্থাপন করা হয়েছে। যেখান থেকে বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্রে বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ করা হচ্ছে।

বন্যাকবলিত সীমান্তবর্তী উপজেলাগুলোতে পর্যাপ্ত ত্রাণ না পাওয়ার অভিযোগ প্রসঙ্গে জেলা প্রশাসক শেখ রাসেল বলেন, আমাদের বিভিন্ন কর্মকর্তা ও চেয়ারম্যানরা ত্রাণ বিতরণ অব্যাহত রেখেছেন। যারা ত্রাণ পান নাই তাদের পৌঁছানোর ব্যবস্থা করছি।

 

সামাজিক মিডিয়া এই পোস্ট শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ ক্যাটাগরীর আরো সংবাদ
© 2024, All rights reserved. এই ওয়েবসাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি। এখানে নিজস্ব সংবাদ প্রচার সহ বিভিন্ন পত্রিকার সংবাদ সুত্র সহ প্রকাশ করা হয়। অনুগ্রহ পূর্বক কেহ অভিযোগ করিবেন না। তাছাড়াও কোন অভিযোগ থাকলে ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকের সাথে যোগাযোগ করার জন্য অনুরোধ করা হইলো।
ডিজাইন ও কারিগরি সহযোগিতায়: রায়তাহোস্ট