ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় এক বৃদ্ধকে কোরবানির গরু নিয়ে উপহাসের কারনে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে তারই প্রতিবেশী এক আইনজীবীর বিরুদ্ধে। সোমবার (১৭ জুন) সকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওই বৃদ্ধের মৃত্যু হয়।
নিহত বৃদ্ধের নাম আবুল হোসেন (৬২)। তিনি উপজেলার ধরখার ইউনিয়নের রুটি গ্রামের দক্ষিণ পাড়ার বাসিন্দা। অভিযুক্ত আইনজীবী একই গ্রামের সামাদ মিয়ার ছেলে রুবেল মিয়া।
নিহত আবুল হোসেনের বড় মেয়ে পাখী আক্তার জানান, গত ২০১২ সালে জমির আইল কেটে নেওয়াকে কেন্দ্র করে সামাদ মিয়ার সঙ্গে তার বাবা-চাচাদের সংঘর্ষ হয়েছিল। সে সময় সামাদ মিয়া ও তার ছেলেরা আবুল হোসেনের বাম হাত ও বাম পা ভেঙে দিয়েছিল। পরে এ ঘটনায় তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছিল। মামলার দায়েরের ক্ষোভে সামাদ ও তার ছেলেরা আবুল হোসেনের পরিবারের প্রতি ক্ষুব্ধ ছিল। এর জেরে প্রতিবেশী এই পরিবারটি একে অপরের সঙ্গে বনিবনা ছিল না।
নিহতের স্ত্রী হারুণা বেগম জানান, গত রোববার ঈদের আগের দিন কোরবানির পশু নিয়ে সামাদ মিয়া ও তার ছেলেরা আবুল হোসেনের ছোট ভাই আবু সাঈদকে উপহাস করলে তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। এ সময় আবু সাঈদের চোখ উপড়ে ফেলার হুমকি দেয় সামাদ মিয়ার ছেলে আইনজীবী রুবেল মিয়া। এরপর আবুল হোসেন হুমকির বিষয়টি রুবেলকে জিজ্ঞেস করতেই রামদা দিয়ে তাকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে ও লাঠি দিয়ে পিটিয়ে আহত করা হয়। বাড়ির কাছেই এ ঘটনা দেখতে পেয়ে আবুল হোসেনকে বাঁচাতে তার ভাই, স্ত্রী, দুই ছেলে ও মেয়েরা এগিয়ে আসলে তাদেরকেও পিটিয়ে আহত করা হয়।
পরে অন্য প্রতিবেশীরা তাদেরকে উদ্ধার করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেন। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সোমবার সকালে আবুল হোসেন মারা যান। এর আগে, তার মেয়ে মুক্তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়।
এদিকে, খবর পেয়ে ধরখার ফাঁড়ি ও আখাউড়া থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে ছুটে যায়। ঘটনাস্থলে দেখে ধরখার পুলিশ ফাঁড়ির এএসআই আবুল কালাম জানান, ঘটনার পরপর সামাদ মিয়া ও তার ছেলেরা কোরবানির পশুসহ বাড়ি থেকে পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে আখাউড়া থানার ওসি নূরে আলম বলেন, আবুল হোসেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। অভিযুক্ত যুবক রুবেলসহ অন্যদেরকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।