ফিলিস্তিনিরা যুদ্ধে বিপর্যস্ত। তারা অনেক কষ্টে জীবন অতিবাহিত করছেন। হজের খুতবায় এসব নির্যাতিতদের জন্য পবিত্র আরাফার ময়দানে অবস্থানকারী হাজিদের দোয়া করার আহ্বান জানানো হয়েছে।
শনিবার (১৫ জুন) ইসলামের নির্দেশনা অনুযায়ী ৯ জিলহজ হাজিরা আরাফার ময়দানে অবস্থান করছেন। তাদের পদধ্বনিতে মুখরিত হয়ে উঠেছে আরাফার ময়দান। হাজিরা নিজেদের মতো আল্লাহর দরবারে গুনাহ মাফের জন্য কান্নাকাটি করছেন।
এরই মধ্যে দুপুরের পর খুতবা শুরু করেন মসজিদুল হারামের ইমাম ও খতিব শায়েখ মাহের আল মুয়াইকিলি। মসজিদে নামিরাহ থেকে হজের মূল খুতবা দেন শায়খ মাহের আল মুয়াইকিলি।
খুতবায় তিনি বলেন, যুদ্ধের কবলে পড়ে ফিলিস্তিনের মুসলমানরা বিপর্যস্ত। তাদের খাবার-পানি, বিদ্যুৎ নেই। তারা পৃথিবীর সব ধরনের সুখ থেকে বঞ্চিত। তাদের জন্য দোয়া করুন। বিশ্ব মুসলিমের কাছে এটা তাদের পাওনা।
তিনি আরও বলেন, ইবাদত শুধু আল্লাহর জন্য। যে ব্যক্তি তাকওয়া অবলম্বন করবে সে এমন জায়গা থেকে রিজিক পাবেন যেখান থেকে সে কল্পনাও করতে পারবে না। আল্লাহতায়ালা হজরত মুহাম্মদকে (সা.) বিশ্ববাসীর জন্য রহমত হিসেবে পাঠিয়েছেন। তাই সফল হতে নবীজিকে অনুসরণ করার আহ্বান জানান খতিব।
আল্লাহর নির্দেশ অনুসারে হাজিদের আরাফার ময়দানে অবস্থান করা ফরজ করা হয়েছে। হজের ৩টি ফরজের মধ্যে এটি অন্যতম। আজ জোহর থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত হাজিরা আরাফার ময়দানে অবস্থান করবেন।
এ জন্য ভোর থেকে আরাফা অভিমুখে ছুটতে শুরু করেছেন হাজিরা। তীব্র গরমকে উপেক্ষা করে তারা সেখানে সমবেত হন।
আরাফার ময়দান পবিত্র মক্কা থেকে প্রায় ১২ মাইল দূরে অবস্থিত। এ ময়দানে মহানবী হজরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিদায় হজের ভাষণ দিয়েছিলেন।
সংবাদমাধ্যম আরব নিউজ জানিয়েছে, সারা বিশ্বের ২০ লাখের বেশি হজযাত্রী শুক্রবার মিনায় রাত কাটিয়েছেন। এরপর তারা সকালে আরাফার ময়দানে পৌঁছান। রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের দেখানো পথ অনুসারে আরাফার ময়দানে সমাবেত হয়েছেন তারা।
সৌদির মসজিদুল হারাম ও মসজিদে নববীর জেনারেল প্রেসিডেন্সি বিভাগ জানিয়েছে, এ বছর আরাফার ময়দান থেকে হজের খুতবা ৫০টি ভাষায় অনুবাদ করে প্রচার করা হয়েছে। বাদশাহ সালমান বিন আব্দুল আজিজের তত্ত্বাবধানে এটিই এখন পর্যন্ত হজের খুতবা অনুবাদের সবচেয়ে বড় প্রজেক্ট।
২০১৮ সালে প্রথমবারের মতো হজের খুতবা ৫টি আন্তর্জাতিক ভাষায় অনুবাদ করা প্রচার শুরু হয়। এরপর ২০১৯ সালে ১০টি এবং ২০২২ সালে ১৪টি ভাষায় এ খুতবা অনুবাদ করা হয়। সর্বশেষ ২০২৩ সালে ২০টি ভাষা এবং এবার পরিধি আরও বাড়িয়ে ৫০ ভাষায় অনূদিত হলো।
বাংলা ভাষায় সম্প্রচারিত খুতবার এ প্রকল্পে বাংলাদেশে মোট চারজন দায়িত্ব পালন করেন। তারা হলেন- ড. খলিলুর রহমান, আ ফ ম ওয়াহিদুর রহমান মাক্কী, মুবিনুর রহমান ফারুক এবং নাজমুস সাকিব। তারা সবাই সৌদি আরবের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যয়নরত।