
মোঃ ইলিয়াস উদ্দীন, বিভাগীয় ব্যুরো চিফ
যশোর অঞ্চলের সবচেয়ে বড় পান-সুপারির হাট বসে যশোর জেলার ঝিকরগাছা উপজেলায় – এমনটাই বললেন সাতক্ষীরা জেলার কলারোয়া উপজেলার বাঁগআচড়ার পান ব্যবসায়ী আব্দুর রশিদ। যশোর জেলার বিভিন্ন অঞ্চল থেকে পাইকারি ও খুচরা পান-সুপারি ব্যবসায়ীরা এখান থেকে পান-সুপারি কিনে নিয়ে যান। সপ্তাহের বৃহস্পতিবার এবং রবিবার সকাল ৬ টা থেকে ৯ টা পর্যন্ত এই হাট বসে।
গতকাল রবিবার সকালে সরেজমিন গিয়ে দেখা যায় – যশোর জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে পান চাষীরা তাদের পান বিক্রির উদ্দেশ্যে হাটে ভীড় করেছেন। যশোর সদর উপজেলার রুদ্রপুর গ্রামের ইমান আলী জানান, ১ বিঘা জমিতে পান চাষ করতে প্রায় ৪ লাখ টাকা খরচ হয়। এ বিক্রি থেকে বছরে প্রায় ১ লাখ টাকা লাভ হয়। তিনি আরো জানান, পান উৎপাদন করতে মাটিতে কীটনাশক দিতে হয়, সেই সাথে খৈল, টিএসপি এবং দস্তা সার প্রয়োগ করতে হয়।
চৌগাছা উপজেলার ধুলিয়ানি গ্রামের কৃষক মিলন জানান, পান ৪ প্রকারের হয়ে থাকে। ঝাল পান,এলসি (ভারতীয় পান) পান, ভাবনা পান এবং পদ্ম ভাবনা পান। ১পন (৮০টা পান) ঝাল পানের দাম ১৪৫-১৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, এল সি পান (ভারতীয় পান) ১৩৫-১৪০ টাকা, ভাবনা পান (মিষ্টি পান) ৮৫-৯০ টাকা, এবং পদ্ম ভাবনা পান (মিষ্টি পানের মত) ১৩০- ১৪০ টাকা।
চৌগাছা উপজেলার উজিরপুর গ্রামের মিজানুর রহমান (৬৫) জানান – আমরা জাত পান চাষী। পান চাষ করে এমনও হয়েছে জায়গা জমি কিনেছি, আবার এমনও দুর্ঘটনা ঘটেছে যে জায়গা জমিও বিক্রি করেছি। শার্শা উপজেলার নাভারনের ইকরাম হোসেন জানান, দীর্ঘদিন ধরে এখান থেকে পান কিনে আমার এলাকায় বিক্রি করে থাকি। এক পন (৮০টা পান) পান বিক্রি করে ৫ থেকে ১০ টাকা লাভ হয়।
সাতক্ষীরা জেলার কলারোয়া উপজেলার এলাকার পাইকারি পান ব্যবসায়ী আব্দুর রশিদ জানান, যশোর অঞ্চলের বড় পানের বাজার বসে যশোরের ঝিকরগাছায়। এ বাজারে মনিরামপুর,কেশবপুর, চৌগাছা, যশোর, বেনাপোল, নাভারনসহ বিভিন্ন এলাকার পান ব্যবসায়ীরা পান কিনতে আসেন।
কেশবপুর উপজেলা থেকে আসা পাইকারি সুপারি ব্যবসায়ী সুজয় দাস জানান – ২৮০ টাকা কেজি দরে শুকনা সুপারি বিক্রি হয়। বিভিন্ন এলাকা থেকে ব্যবসায়ীরা এখানে সুপারি কিনতে আসেন।
কেশবপুরের কাঁচা সুপারি ব্যবসায়ী রিপন দাস জানান, ১০০ পিস কাঁচা সুপারি ৪০০ টাকা দরে বিক্রি হয়।
অধিকাংশ পান চাষীদের দাবি এক গাদি (৮০ পণ পান) পানের খাজনা ২০ টাকা দিতে হয়। যা একটু বেশি বলে আমাদের কাছে মনে হয়।
ঝিকরগাছা উপজেলা কৃষি অফিসার মাসুদ হাসান পলাশ জানান – ঝিকরগাছায় ৭০ জন কৃষক ১২ হেক্টর জমিতে পান চাষ করে থাকেন। পান চাষে তারা বেশ লাভবান।