০৪-০৬-২০২৪
আব্বু পাঁচ বছর ধরে ব্রেনস্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে পঙ্গু। পঙ্গু হবার মাত্র এক বছর পরেই মা চলে গেছে পরপারে। আমরা কীভাবে বাঁচব? কীভাবে আব্বুকে দেখব? ওষুধ কেনার টাকা নেই। ঘরে চাল থাকে না। ভাঙ্গা খুপড়ি ঘরের বারান্দায় আব্বুকে রেখেছি। ছোট বোনটাও বড় হচ্ছে। একটি ঘরের খুব দরকার। এভাবে কথা বলতে বলতে কেঁদে ফেলে চৌগাছার পত্রিকার পরিবেশক ও সিংহঝুলী ইউনিয়নের ফতেপুর গ্রামের পঙ্গু শফিউদ্দীনের ছেলে আরিফ হোসেন। পাশে উপস্থিত থেকে ছোট মেয়ে জান্নাতিও অঝোরে কাঁদতে থাকে। এ দৃশ্য দেখে গণমাধ্যম কর্মীরাও চোখের পানি সংবরণ করতে পারিনি।
খোঁজ নিয়ে জানাগেছে, ২০১৮ সালে হঠাৎ ব্রেনস্ট্রোকে আক্রান্ত হন পত্রিকা পরিবেশক শফিউদ্দিন (৬০)। এরপর তিনি পঙ্গুত্ব বরণ করে অসুস্থ্য অবস্থায় শয্যাসায়ী। কিন্তু কী নির্মমতা! মাত্র এক বছর পরেই তার স্ত্রী হৃদরোগে মৃত্যুবরণ করেন।
শিশু দুটি সন্তান আরিফ হোসেন ও জান্নাতি আক্তার বড়ই অসহায় হয়ে পড়ে। ছোট বয়সেই আরিফ দিনমজুরের কাজ করে সংসার চালায়। থেমে যায় তার লেখা পড়া। অনার্সে ভর্তি হয়েছে। ঠিকমত ক্লাস করতে পারেনা। অসুস্থ্য পিতা, ছোটবোনের দেখাশুনা ও দিনমজুরের কাজ করতে করতে দিশেহার আরিফ।
আরিফ জানায়, আব্বুর চিকিৎসা দরকার। জান্নাতি ৬ষ্ট শ্রেণিতে পড়ে। ওর লেখাপড়ার খরচও আছে। দুই ভাইবোন দিনে একবেলা রান্না করে আব্বুকে খাওয়ায়। সরকারি একটি ঘর হলে আমাদের জন্য খুব ভালো হতো। বোনটা ধীরেধীরে বড় হচ্ছে। যে ঘরে আমরা থাকি তা ভাঙ্গাচোরা। আব্বুকে বারান্দায় রাখি।
আরিফ জানায় বোনটার খুব লেখাপড়া করার ইচ্ছা। আমার পক্ষে সব খরচ করতে খুব কষ্ট হচ্ছে। যা রোজগার করি আব্বুর ওষুধ কিনে আর টাকা থাকেনা। কখনো কখনো ঘরে চাল থাকেনা। তরিতরকারি থাকেনা।
জান্নাতি আক্তার জানায়, আমার আব্বুকে সুস্থ্য করে দেন। সরকার কি পারেনা আব্বুকে ওষুধ কিনে দিতে? এ সময় দুইভাই বোন নিজেদের থাকার জন্য সরকারি ঘরের দাবী জানায়।